কিশোরগঞ্জের নিকলীতে চাঞ্চল্যকর ব্যবসায়ী হত্যা মামলার প্রধান পলাতক আসামি সাদ্দাম হোসেন হোসেন (৩৫) কে কটিয়াদির কামারকোনা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪ এর সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের র্যাব সদস্যরা।
গ্রেফতারকৃত হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাদ্দাম হোসেন নিকলী উপজেলার কুমারছড়া এলাকার জালাল উদ্দিনের ছেলে।
র্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, গত ২৫/০৯/২০২৩ ইং তারিখ রাত অনুমান ০১.১৫ ঘটিকার সময় কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী থানাধীন পূর্বগ্রাম বেড়িবাঁধে ভিকটিম নজরুল ইসলাম তার হাঁসের খামারের আশেপাশে আসামী সাদ্দাম হোসেন ও মোকারম সহ অজ্ঞাতনামা ০২ জনকে সন্দেহজনক ভাবে ঘুরাফেরা করতে দেখে ভিকটিম নজরুল ইসলাম আসামীদেরকে জিজ্ঞাসা করিলে আসামীরা ক্ষিপ্ত হইয়া ভিকটিম নজরুল ইসলামকে খুন করার উদ্দেশ্যে এলোপাতারি কিলঘুষি মারিয়া বুকে, পিঠে, গলায় নীলা ফুলা রক্তাক্ত জখম করে এবং আসামী সাদ্দাম হোসেন ভিকটিম নজরুল ইসলামের জামার পকেটে থাকা তার হাঁসের ব্যবসার ৯০,০০০/-(নব্বই হাজার) টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় ভিকটিম নজরুল ইসলামের ডাকচিৎকারে আশপাশের দোকানদার ও অন্যান্য লোকজন দৌড়ে ঘটনাস্থলে আসিলে আসামী সাদ্দাম হোসেন ও মোকারম সহ অজ্ঞাত ০২ জন ওখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। ঐ ঘটনার পর এলাকার লোকজন নজরুল ইসলামকে গুরুতর আহত অবস্থায় নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরবর্তীতে নজরুল ইসলামের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে আশংকাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল তারপর ময়মনসিংহ মেডিকেল এবং সর্বশেষ ঢাকা মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৮/০৯/২০২৩খ্রি. তারিখ ভিকটিম নজরুল ইসলাম মারা যায়। উক্ত ঘটনাসংক্রান্তে ভিকটিমের স্ত্রী খোদেজা(৪২), বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী থানায় ০১টি মামলা দায়ের করে। যার কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী থানার মামলা নং-১৩/৮৮, তারিখ-২৮/০৯/২০২৩খ্রি.,ধারা- ৩২৩/৩২৫/৩০৭/৩৭৯/৫০৬ পেনাল কোড ১৮৬০। উক্ত ঘটনায় আসামীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে এলাকার মানুষ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। বর্ণিত বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। নিহতের স্ত্রীর মামলা দায়েরের পর এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা আসামীরা গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়। উক্ত আসামীদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পলাতক থাকা উক্ত মামলার ০১নং এজাহারনামীয় আসামীর অবস্থান সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে এবং গোয়েন্দা শাখার সহযোগীতায় তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামীর অবস্থান নিশ্চিত করে র্যাব-১৪, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লীডার মোঃ আশরাফুল কবির এর নেতৃত্বে র্যাবের একটি আভিযানিক দল গত শুক্রবার ২০ অক্টোবর সন্ধ্যা ০৬.৪৫ মিনিটের সময় কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী থানাধীন কামারকোনা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে উক্ত মামলার এজাহারনামীয় ০১নং পলাতক আসামী সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেফতার করেছে।
এই বিষয়ে র্যাব জানায়, উক্ত মামলার অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের জন্য র্যাব-১৪ এর অভিযান অব্যহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃত সাদ্দাম হোসেনের নামে নিকলী থানায় পূর্বে ডাকাতি সহ একাধিক মামলা রয়েছে। তার অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ ছিল।
উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আসামিকে কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
জনপ্রিয় খবর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: