বেতন বকেয়া থাকায় পরীক্ষা দেওয়া হল না ১৪ শিক্ষার্থীর

দিলীপ কুমার দাস, ময়মনসিংহ | ৫ অক্টোবর ২০২৩, ০১:৫৯

ছবিঃ সংগৃহীত

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে না পারায় দ্বাদশ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ১৪ শিক্ষার্থীকে শ্রেণীকক্ষে ১ ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রেখে কলেজ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার শাকুয়াই বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজে। ৪ অক্টোবর (বুধবার) এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন কলেজের শিক্ষার্থীবৃন্দ।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার কলেজে প্রাক-নির্বাচনী অর্থনীতি পরীক্ষা চলছিল। এ সময় প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. দৌলত আলী ও কলেজের প্রভাষক আব্দুস সালাম শ্রেণী কক্ষে ঢুকে অতিরিক্ত ফি না দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের প্রথমে ১ ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রেখে গালমন্দ করে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেন।

দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী মাইশা আক্তার ইমু বলেন, আমার কাছে কলেজে বেতন পায় ১০ হাজার ৫শত টাকা, আমি কলেজে ৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেছি। বাকি টাকা না দিতে পারলে চলে যাও, তুমার বাবাকে গিয়ে বলো তোমাকে বিয়ে দিয়ে দিতে, তোমার আর পড়তে হবে না বলে আমাকে গালমন্দ করেন প্রভাষক সালাম স্যার।

সোহানা জান্নাত শাম্মি নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমার কাছে বকেয়া বেতন পায় ৯ হাজার টাকা। আমি ৫ হাজার ৫ শত টাকা পরিশোধ করেছি। সালাম স্যার বলেন, বাকি টাকা না দিতে পারলে চলে পরীক্ষা দিতে হবে না। প্রতিটি পরীক্ষার্থীকে একই কথা বলে বের করে দিয়েছে।

স্থানীয় শিক্ষার্থীর অভিভাবক মানিক বাহাদুরী বলেন, আমাদের সন্তানরাই এই কলেজে লেখাপড়া করেন। এই এলাকার অনেকেই আছেন যারা অস্বচ্ছল। আমার ভাগনী বেতন পরিশোধ করতে পারে নাই ,পরে আমার ভাগনীকে হল থেকে বের করে দিয়েছে। অপরাধ সঠিক সময়ে বেতন হয়তো দিতে পারেনি। কিন্তু শিক্ষকদের কাছে আমরা এমন আচরণ আশা করি না।

এই বিষয়ে শাকুয়াই বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ দৌলত আলী বলেন, বিষয়টি তিনি আজকে জেনেছেন। দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীদের কাছে অনেক টাকা বকেয়া পাওনা রয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী দিতে চান না। দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীদেরকে বের করে দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রভাষক আব্দুল সালামের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, তিনি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বলে এসেছিলেন, কারো বেতন বকেয়া থাকলে কলেজ অধ্যক্ষ থেকে অনুমতি নিয়ে আসার অনুরোধ করেন। এতে ছাত্র ছাত্রীরা বিষয়টি বুঝতে না পেরে সরাসরি বাসায় চলে যায়। শুধুমাত্র ভুল বুঝাবুঝির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।

এ ব্যাপারে প্রভাষক আব্দুল সাালাম মুঠোফোনে বলেন, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে শুধু বলেছিলাম, কারো বেতন বকেয়া থাকলে কলেজ অধ্যক্ষ থেকে অনুমতি নিয়ে আসার জন্য। এতে ছাত্র ছাত্রীরা বিষয়টি বুঝতে না পেরে সরাসরি বাসায় চলে যায়। আমি কাউকে বের করে দেই নি।

এ ব্যাপারে হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান বলেন, শাকুয়াই বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে একটি অভিযোগ পত্র পেয়েছি, আমি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্তের জন্য বলেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


জনপ্রিয় খবর