ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ১৬ নং নারগুন ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে প্রতিবেশি পাঁচ বছরের এক শিশুকে যৌন নিপীড়ন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় শুক্রবার (০৭ অক্টোবর) যৌন নিপীড়নের শিকার ওই শিশুর বাবা ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে শুক্রবার রাতেই এলাকাবাসী ছোট খোঁচাবাড়ি এলাকার ঠাকুরগাঁও-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে ব্যানারে পাঁচ বছরের শিশু নিপীড়নকারী হুমায়ুনের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছেন।
সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করায় সড়কে যানজটের সৃষ্টি হলে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি কামাল হোসেন এসে আসামীকে রাতের মধ্যেই গ্রেফতার করার আশ্বাস দিয়ে বিক্ষোভকারিদের শান্ত করে রাস্তা ফাঁকা করেন।
ভুক্তভোগীর পরিবার জানান, গত ১৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে শিশুটিকে অভিযুক্ত হুমায়ুন কবির খাবারে লোভ দেখিয়ে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে ও শিশুটির মুখ চেপে ধরে যৌনিতে আঙ্গুল ঢুকিয়ে যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের চেষ্টা করে। কিন্তু এ ঘটনাটির কথা অভিযুক্তের নানা ধরণের হুমকি-ধমকির কারণে গোপন রেখেছিলেন শিশুটির মা। পরে যৌন নিপীড়নের ফলে দিন দিন শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে গত ৪ অক্টোবর দুপুরে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
শিশুটির স্বাস্থ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের গাইনী বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা: সালমা সুতলনা জানান, এটি র্যাপ না হলেও এটি কিন্তু একটি সেক্সচুয়াল অ্যাসল্ট অর্থাৎ যৌন নিপীড়ন। তারা চাইলে আইনের আশ্রয় নিতে পারেন।
হুমায়ুন এর আগেও এধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছে বলে শুনেছেন স্থানীয়রা। আর যাতে নারী ও শিশুদের সাথে এ ধরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনা কেউ ঘটাতে না পারে তাই সুষ্ঠু তদন্ত করে তার কঠোর শাস্তি দাবি করেন স্থানীয়রা ও ভুক্তভোগীর স্বজনরা।
শিশুটির পরিবার থানায় মামলা করার আগে বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) রাতে অভিযুক্ত হুমায়ুন করিরের কাছে শিশুটিকে যৌন নিপীড়ন করার কথা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, 'প্রায় ৩ মাস আগে তার ঘরে শিশুটি একাই রিমোট নিয়ে টিভি দেখছিল। তখন তাকে তিনি টিভি দেখতে নিষেধ করেন। কিন্তু শিশুটি টিভি বন্ধ করার জন্য রিমোট দিতে না চাইলে রিমোট কাড়ে নেওয়ার সময় শিশুটি হাতপা ছোড়া ছুড়ি করে। এসময় শিশুটির শরীরে কোথায় তার হাত লেগেছে তা তার জানা নেই।'
এছাড়াও ভুক্তভোগী পরিবারকে নানা ধরণের হুমকি দেওয়ার কথা অস্বীকার করে তিনি আবার বলেন, ‘গত ১৫ দিনের মধ্যে দুইবার ওই শিশুর পরিবারের সাথে তার ঝগড়া হয়েছিল। তখন সেই মহিলাকে থ্রেট করেছিলেন ও মারতেও উদ্ধত হয়েছিলেন। তাইর জের ধরে এই হয়রানি করছেন তাকে বলে জানান।
যৌন হয়রানি করার অভিযোগে শিশুটির বাবা শুক্রবার (০৭ অক্টোবর) দুপুরে থানায় একটি এজাহার দিয়েছেন। এজাহারের প্রেক্ষিতে আমরা তাৎক্ষণিক মামলা নিয়েছেন ও আসামীকে গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে বলে জানান ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: