মহাসপ্তমীর লগ্ন পেরিয়ে আজ শারদীয় দুর্গোৎসবের মহা অষ্টমী। দুর্গাপূজার সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং জাঁকজমকপূর্ণ দিন।
সোমবার (৩ অক্টোবর) মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে পূজা অর্চনা। দেশের বিভিন্ন স্থানে হয়েছে কুমারি পূজা।
বিহিত পূজার মাধ্যমে শুরু হয় মহাষ্টমীর আনুষ্ঠানিকতা। আজ কুমারি পূজা এবং দেবীর সন্ধিপূজারও আয়োজন করা হবে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, দেবী দুর্গা সব নারীর মধ্যেই মাতৃরূপে বিরাজমান। এ উপলব্ধি সবার মধ্যে জাগ্রত করতেই কুমারি পূজার আয়োজন করা হবে। এছাড়া কুমারি নারীকে দেবী ও মাতৃরূপে সাজিয়ে হবে কুমারি পূজা।
শাস্ত্রমতে, দেবীকে আসন, বস্ত্র, পুষ্পমাল্য এ ধরনের ষোল উপাদান (ষোড়শ উপাচার) দিয়ে মহাঅষ্টমীর পূজা-অর্চনা করা হয়। প্রত্যুষে ত্রিনয়নী দেবীর চক্ষুদান করা হয়। এই দিনে মহিষাসুরকে বধ করে দেবী বিজয় লাভ করেছিলেন।
মোংলার বিভিন্ন মন্ডপে সকালে মহাসমারোহে কুমারি পূজা হয়েছে। কুমারি বালিকার মধ্যে বিশুদ্ধ নারীর রূপ কল্পনা করে তাকে দেবী জ্ঞানে পূজা করবেন ভক্তরা। এর মাধ্যমে নারীদের প্রতি সম্মান জানানো হয় বলে জানান ভক্তরা। পূজা-অর্চনা শেষে দেবীর কৃপালাভের আশায় তার চরণে পুষ্পাঞ্জলি দেন ভক্তরা।
শ্রীরাম কৃষ্ণের কথামতে, কুমারি পূজার বিষয়ে বলা হয়েছে, শুদ্ধাত্মা কুমারিতে ভগবতীর রূপ বেশি প্রকাশ পায় এবং মাতৃরূপ উপলব্ধি করাই কুমারও পূজার উদ্দেশ্য।
শাস্ত্রমতে, এক বছর বয়সী কন্যাকে সন্ধ্যা, দুইয়ে সরস্বতী, তিনে ত্রিধামূর্তি, চারে কলিকা, পাঁচে সুভাগা, ছয়ে উমা, সাতে মালনী, আটে কুজ্বিকা, নয়ে কালসন্দর্ভা, দশে অপরাজিতা, এগারোয় রুদ্রানী, বারোয় ভৈরবী, তেরোয় মহালক্ষ্মী, চোদ্দতে পীঠ নায়িকা, পনেরোতে ক্ষেত্রজ্ঞা এবং ষোলো বছরে তাকে অন্নদা নামে অভিহিত করা হয়।
সারা দেশের রামকৃষ্ণ মিশনগুলোতে আয়োজন করা হবে এই পূজার। হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, সাধারণত ১ থেকে ১৬ বছরের অজাতপুষ্প সুলক্ষণা ব্রাহ্মণ বা অন্য গোত্রের অবিবাহিত কুমারি নারীকে দেবী জ্ঞানে কুমারিকে পূজার উল্লেখ রয়েছে।
নির্বাচিত কুমারিকে মহাষ্টমীর দিন ভোরে স্নান করিয়ে নতুন কাপড় পরানো হয়। তাকে সাজিয়ে কপালে সিঁদুর, পায়ে আলতা ও হাতে ফুল দেওয়া হয়। কুমারিকে সুসজ্জিত আসনে বসিয়ে ষোড়শোপাচারে (ষোলো উপাদান) দেবীজ্ঞানে পূজা করা হয়। এ সময় চারদিকে শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বোল, উলুধ্বনি আর দেবী স্তুতিতে মুখর হয়ে ওঠে।
পুরাণ অনুযায়ী এবার দেবী মর্ত্যে এসেছেন গজে চেপে। দুর্গা গজে চড়ে এলে সুখ ও সমৃদ্ধি বয়ে আনেন। আর ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে দেবী মর্ত্য ছাড়বেন নৌকায় চড়ে। নৌকায় গমনেও ধরণী হবে শস্যপূর্ণ। তবে থাকবে অতিবৃষ্টি বা বন্যা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: