মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বাহাদুরপুর ঘাট এলাকায় পদ্মা নদীতে প্রকাশ্যে চলে চাঁদাবাজি। নিয়মিত পদ্মা নদীতে চলাচলকারী পণ্যবাহী এবং বালুবাহী নৌযান থেকে চাঁদা আদায় করে কয়েকটি গ্রুপ। চাঁদা না দিলে নৌযানে থাকা লোকজনকে মারধোর ও বিভিন্ন হুমকি দেয়া হয়। কয়েক বছর ধরে প্রকাশ্যে এমন চাঁদাবাজি চললেও তা বন্ধে কোন উদ্যোগ নেই।
পদ্মার এই রুটে নিয়মিত চলাচল করা মাঝি আক্কাস বলেন, "বাহাদুরপুর পয়েন্টে ৪-৫টি গ্রুপ নিয়মিত চাঁদা আদায় করে। পদ্মায় চলাচলরত পণ্যবাহী এবং বালুবাহী নৌযান দেখলে তারা ছোট ট্রলার নিয়ে ধরে। ওই নৌযানের সাথে তাদের ট্রলার বেঁধে তারা নৌযানে উঠে চাঁদা দাবি করে। তাদের দাবিকৃত চাঁদা না দিলে তারা বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায় এবং মারধোর করে।"
মো. আলাল মাঝি বলেন, "প্রায় ৩-৪ বছর ধরে কয়েকটি গ্রুপ নিয়মিত বাহাদুরপুর পয়েন্টে চাঁদাবাজি করছে। এরা চাঁদা না দিলে নৌযানে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখায়। মারধোরও করে। এরা ১০০, ৫০০, ২০০০, ৩০০০-যার কাছে থেকে যেরকম পারে আদায় করে।"
স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় চলে চাঁদাবাজি।
রামকৃষ্ণপুর গ্রামের শাহজাহান বলেন, "এর সাথে প্রভাবশালীরা অনেকেই জড়িত। জড়িত না থাকলে এরা দীর্ঘদিন প্রকাশ্যে তো আর চাঁদাবাজি করতে পারতো না। দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি চললেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন।"
রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন বলেন, "পদ্মায় চাঁদাবাজির বিষয়টি কয়েকবার আমি উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় উপস্থাপন করেছি। কিন্তু এর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ওসি সাহেব বলেছেন বিষয়টি দেখার দায়িত্ব নৌ-পুলিশের। যেহেতু দীর্ঘদিনেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, সেক্ষেত্রে কার কি স্বার্থ থাকতে পারে, আমরা তা বুঝতে পারি।
হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মিজানুর ইসলামও বলেন, "পদ্মায় চাঁদাবাজির বিষয়টা দেখার দায়িত্ব নৌ-পুলিশের।"
তবে, এই চাঁদাবাজির সাথে পুলিশও জড়িত বলে জানিয়েছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, "আমি লোকমুখে শুনি যে এর সাথে ওসি সাহেব জড়িত।"
উল্লেখ্য যে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর পদ্মানদীতে চাঁদা না পেয়ে পাঠকাঠি বোঝাই ট্রলারে আগুন দেয় চাঁদাবাজরা। তারই প্রেক্ষিতে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাও হয়, মামলাতেও নাকি মুল হোতারা বাদ গেছে বলেও স্থানীয়দের ক্ষোভ বিরাজ করছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: