বাড়িতে বাবার লাশ। চারদিকে স্বজনদের কান্না, আহাজারি। এরমধ্যেই এসএসসি পরীক্ষা দিলেন নাজমা বেগম। তিনি নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার নবারুণ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
নাজমার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে তার পিতা নুরুল হক মীর (৫৬) স্ট্রোক করে মারা যায়। পরিবারের কর্তার হঠাৎ এই চলে যাওয়া কোনভাবেই মানতে পারছে না স্বজনরা। তাদের চোখে এখন কেবলই অশ্রুধারা আর হৃদয়ে তীব্র আর্তনাদ।
নাজমার এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র গুজিরকোণা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে আজ পরীক্ষা দিতে এসে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
কান্নাজড়িত কন্ঠে নাজমা বলেন, বাবা আর নেই। বাবা আর কখনোই আমাকে মা বলে ডাকবে না। এটা আমি মানতে পারছি না। বাবার এভাবে চলে যাওয়া আমাকে ভীষণ কষ্ট দিচ্ছে।
এই শিক্ষার্থী যখন অশ্রুসজল চোখে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকছিলেন তখন তার বন্ধুদের চোখেও জল। সেটি ছুঁয়ে গেছে শিক্ষকদেরও।
নাজমার শিক্ষকরা জানান ছোটবেলা থেকেই সে অনেক মেধাবী ছাত্রী। নবারুণ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক অশোক কুমার ভাদুড়ি বলেন, বিজ্ঞান বিভাগের এই মেয়েটি পড়াশোনায় ভীষণ মনযোগী। বাবার লাশ বাড়িতে রেখে মনে কষ্ট চেপে সে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। আমি তার প্রতি সমবেদনা জানাই। নাজমা জীবনে অনেক বড় হোক এই কামনা করি।
এই পরীক্ষার্থী যখন পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করছিলেন তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন দুর্গাপুর সাংবাদিক সমিতির সভাপতি কবি সজীম শাইন। তিনি বলেন, নাজমা প্রচন্ড কষ্ট চেপেও যেভাবে পরীক্ষা দিয়েছে সেটি তাকে জীবনে অনেক বড় জায়গায় নিয়ে যাবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: