জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বিয়ালা দ্বি -মুখী উচ্চ বিদ্যলয়ের প্রধান শিক্ষক মহাতাবের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী, কাম কম্পিউটার, ল্যাব অপারেটর, অফিস সহায়ক, আয়া ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীসহ মোট র্পাঁচজন কর্মচারী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে ৫টি পদে পাঁচ জনকে নিয়োগ দিয়ে তিনি বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থী এবং স্থানীয়ারা অভিযোগ তুলেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ে এডহক কমিটির উপর তিনটি মামলা সহকারী জজ আদালতে,কালাই জয়পুহাট বিচারাধীন আছে যার মামলা নং ২৮৯/ ২১ -৩৩/২২ /৪৭/২২ এসব অভিযোগের নিষ্পত্তি না হওয়ায় উপজেলার বিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ে গত (২৭জুলাই) ২২ তারিখে বিয়ালা দ্বি- মুখী বিদ্যলয়ে অফিস সহায়ক, ল্যাব এসিস্ট্যান্ট, অফিস সহকারি নৈশপ্রহরী ও আয়া পদে ৫ জনকে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বানিয়ে প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়, এই ৫টি পদে ৫ জনকে নিয়োগ দিয়ে প্রধান শিক্ষক মহাতব প্রায় দের কোটি টাকা নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। অপরদিকে নিয়োগ পরীক্ষা অনিয়মের কারনে চলমান কমিটির অভিভাক সদস্য আবুল হায়াৎ নামের এক ব্যক্তি জেলা শিক্ষা অফিস জয়পুহাট ও মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন।
নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থী শামীম রেজা বলেন, অফিস সহকারি পদে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। আমার সাথে সভাপতি ফজলু রহমানের কাছে ১২লাখ টাকার চুক্তি হয়েছিল। চুক্তি মোতাবেক তাকে ১লাখ টাকা অগ্রিম দিয়েছিলাম। কিন্তু সে আমাকে চাকরি দেয়নি। অপর প্রার্থী সাদুরিয়া বলরাম পুরের খোরশেদ আমলমের কাছে থেকে ১৮ লাখ টাকা পাওয়ায় তাকে চাকরি দিয়েছে। পরে আমার টাকা ফেরত দিয়েছে। চাকরি প্রত্যাশী শামিম আর ও বলেন, আমাকে বাদ দিয়ে যে ছেলেকে চাকরি দিয়েছে সে কত টাকা দিয়েছে তার কল রেকর্ড আমার কাছে আছে স্থানীয়রাও অনেকেই পরীক্ষা দিয়েছে এখানে কি যোগ্য ব্যক্তি ছিলো না? বগুড়া জেলার প্রার্থীকে চাকরি দিলেন নাটক সাজিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার মানে হয় না আমি এই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল চাই৷
সাবেক সভাপতির ছেলে ল্যাব এসিস্ট্যান্ট পদে অংশগ্রহণকারী সাইদুল ইসলাম এর বাবা বলেন, প্রধান শিক্ষক মাহাতাব আমাকে বলেন ,আপনার ছেলেকে চাকুরি দিবো ১৬ লাখ টাকা দিবেন কাউকে বলা যাবে না । আমাকে আশ্বাস দিলেও কিন্তু তিনি আমার ছেলেকে চাকরি দেননি। অপর প্রার্থী নিকট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে তাকে চাকুরি দিয়েছেন।
গত (৩০ আগস্ট) বিদ্যলয়ের সরেজমিনে গেলে উৎসক জনতা ঢল দেখা যায়। একাধিক স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, এই মহাতাব ২০০৪ সালে প্রধান শিক্ষক হয়ে যোগদানের পর থেকে দুইবারে মোট ১১ জনকে নিয়োগ দিয়ে বিদ্যালয়ের নিয়োগ বানিজ্য অর্থ লুটপাট করেছে। তার বাড়ি ছিলো টিনসেটের এখন তার বাড়ি তিন তলা বিল্ডিং এত আয়ের উৎস কোথায় ? স্থানীয়দের দাবি স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেধার যাচায়ে চাকুরি হক এটাই আমাদের চাওয়া। এখানে টাকার খেলা ও নিয়োগ পরীক্ষার দিন কালাই থেকে মাস্তান ও পুলিশের বহর নিয়ে এসেছে৷ এ সংক্রান্ত সকল অভিযোগের কপি ও ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষণ রয়েছে৷
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মহাতাবের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে হয়েছে। এ নিয়োগে আমি কোনো প্রার্থীর সাথে আর্থিক লেনদেন করিনি।
এ নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় বলে একাধিক সুত্রে জানা যায়। তবে প্রধান শিক্ষক মহাতাব এ অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজলু রহমান বলেন, নিয়ম মোতাবেক নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়েছে। আমাকে সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে চাপে রাখতে কিছু মানুষ ষড়যন্ত্র করছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আঃ রাজ্জাক বলেন, আবুল হায়াতের অভিযোগের আলোকে মাউশি রাজশাহী অঞ্চলের স্মারক নং ৬৪২৭ তদন্তকরন প্রসঙ্গে আমারা একটি নোটিশ পেয়েছি আমরা গত (৩০ জুলাই ২২) ঘটনার স্থলে গিয়েছি বাদীর অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হয়েছে মূল কপি দেখে যদি সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করব৷
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: