পটুয়াখালী একমাত্র ঐতিহ্যবাহী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে বহুতল ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে স্কুলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২৮ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত খেলার মাঠ রক্ষার দাবিতে তারা এ আন্দোলন করে। এ সময় শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠানের প্রধান গেটে তালা লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের অবরুদ্ধ করতে চাইলে তারা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। পরে পটুয়াখালী পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিক্ষার্থীদের নিবৃত্ত করতে সক্ষম হন।
এদিকে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে শিক্ষকরা স্কুলের মূল গেট খুলে দিলে সড়কে বেড় হয়ে বিক্ষোভ করে তারা।
শিক্ষার্থীরা বলে, পটুয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত। প্রতিষ্ঠানে ৪৫ জন শিক্ষক ও ১৬৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুযায়ী জায়গা যথেষ্ট অপ্রতুল। অথচ স্কুলের খেলার মাঠে জেলা প্রশাসন বহুতল ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে, যার প্রতিবাদের আমরা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। কিন্তু শিক্ষকরা মূল গেটে তালা লাগিয়ে দেয়ায় আমরা স্কুলের ভেতরে আন্দেলন করতে বাধ্য হই।
এ সময় প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্য সুইটি বেগম, নাজমুন্নাহার শিমুল, সেলিনা আক্তার, রাশিদা মনি, নুসরাত তিশা, রাফিয়া ইসলাম সিফা বলেন, শতবর্ষের ইতিহাস ঐতিহ্যবাহিত এ বিদ্যাপীঠে জড়িয়ে রয়েছে শিশু, শৈশব ও কৈশোর। অবিকল মায়ের মমতায় শিক্ষার আলো নিয়ে এ প্রতিষ্ঠান থেকে তৈরি হয়েছে দেশ গড়ার লাখো কারিগর। বর্তমান সরকার যেখানে খেলা ও শরীরচর্চায় গুরুত্ব দিচ্ছে, সেখানে খেলার মাঠে বহুতল ভবন নির্মাণ অযৌক্তিক। জেলা প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, জেলার একমাত্র নারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এটি। বর্তমানে এখানে ১৬৫০ শিক্ষার্থী রয়েছে। সামনে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়বে, তখন স্কুলে কক্ষ সংকট দেখা দেবে। তখন জমি ও জায়গার প্রয়োজন হলেও ভবন অপসারণ অথবা ভেঙে জমি উদ্ধার করা সম্ভব হবে না। তাই জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করব মানবকি দিক বিবেচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে।
পটুয়াখালী পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ভবিষ্যতে কলেজ হবে, ডিগ্রি কলেজ হবে। তখন জায়গার প্রয়োজন হবে। তাই আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ জানাব যেন স্কুলের পেছনের যে মাঠটি আছে, সেটা সম্পূর্ণ এই গালর্স স্কুলের নামে করে দেয়া হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, মূলত ওই জমি জেলা প্রশাসনের। ১৯৮৫ সালে উক্ত জমি তৎকালীন জেলা প্রশাসকের মৌখিক অনুমতিতে স্কুল কর্তৃপক্ষ ব্যবহার করে আসছে। তাছাড়া উল্লিখিত স্থানে ২.২০ শতাংশ জমি থেকে ৭৫ শতাংশ জমি স্বেচ্ছায় স্কুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়াও ৬ ফুটের প্রশস্ত সড়ক ১৫ ফুটে উন্নীত করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। একটি মহলের উস্কানিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে, যা অযৌক্তিক।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: