নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে পাবনার ফরিদপুর উপজেলার পুঙ্গলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সাজেদুল ইসলাম সুমনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন পরিষদের ১১ সদস্য।
শুক্রবার (২৬ আগষ্ট) বিকেলে পুঙ্গলী ইউনিয়নের শালিকা বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ইউপি সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ ও সংরক্ষিত ১২ সদস্যের মধ্যে ১১ জন উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইউপি সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারী দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচিত চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যদের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরপর থেকেই চেয়ারম্যান সাজেদুল ইসলামের সীমাহীন দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতায় জড়িয়ে পড়েছেন।
ইউপি সদস্যদের অভিযোগ, কাবিটা প্রকল্পের মেঘডুম্বর খেয়াঘাট হতে শ্রীগোবিন্দপুর অভিমূখে রাস্তা নির্মাণ কাজের ৪ লাখ পাঁচ হাজার টাকার কাজ না করেই বিল উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন চেয়ারম্যান। অন্যদিকে টিআর প্রকল্পের পুঙ্গলী ইউনিয়নের উন্নয়নমূলক কাজের ৩ লাখ টাকা, বিল চান্দক সাব মার্সিবল রোড় হতে খেলার মাঠ অভিমুখে রাস্তা সংস্কারের ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা, দিঘুলিয়া মাদরাসা হতে বাহাদুর খার জমি পর্যন্ত ক্যানাল মেরামত বাবদ ১ লাখ ১৫ হাজার টাকার কোন কাজই দৃশ্যমান হয়নি।
এছাড়া ৪০ দিনের কর্মসূচি প্রকল্পে শ্রমিকদের সাক্ষর/টিপসই জাল করে কাজ না করেই অর্থ আত্মসাত করা হয়েছে। তিনটি মাটির রাস্তার কাজে ২২ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। ইউপি মেম্বরদের সঙ্গে কোন প্রকাল আলোচনা না করেই তাদের হুমকি-ধামকি দিয়ে এসব টাকা আত্মসাত করা হয়।
ইউপি সদস্য গোলজার হোসেন, আবু সাইদ, রবিউল ইসলাম, মন্টু প্রামানিক অভিযোগ করে বলেন, তাদের সাথে কোন প্রকার আলোচনা বা সমন্বয় না করে এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা করছেন চেয়ারম্যান সাজেদুল ইসলাম সুমন। তিনি পেশী শক্তি, হুমকি-ধামকি এবং বহিরাগতদের নিয়ে পরিষদ চত্তরেই চেয়ারম্যান মাদক সেবন করেন বলে অভিযোগ ইউপি সদস্যদের। এসব অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে তারা অবিলম্বে ইউপি চেয়ারম্যান সাজেদুল ইসলাম সুমনের পদত্যাগ দাবি করেন।
এসব অভিযোগ তুলে তদন্তের দাবিতে দুদক, স্থানীয় সরকার বিভাগ সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ইউপি সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে ইউপি সদস্য গোলজার হোসেন, আবু সাইদ, রবিউল ইসলাম, মন্টু প্রামানিক, সোহেল রানা, মুকুল হোসেন সরদার, মাহাতাব উদ্দিন, আসমা খাতুন, শাপলা খাতুন সহ ১১ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সাজেদুল ইসলাম সুমন বলেন, অভিযোগগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। যেসব প্রকল্পের কথা বলা হয়েছে সেগুলো ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা ছিল। তারা কাজ দেখে তারপর বিল দিয়েছে। একটি প্রকল্পের কাজ করা হয়নি বন্যার পানি থাকার কারণে। পানি নেমে গেলে কাজ করা হবে। আর কর্মসৃজন প্রকল্পে শ্রমিকদের মোবাইলে টাকা আসে ঢাকা থেকে। এখানে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি করা হয়নি।
এ বিষয়ে ফরিদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা: জেসমীন আরা কে কয়েকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভি না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: