ঠাকুরগাঁও পৌরসভার আওতায় পরিচালিত ঐতিহ্যবাহী সবচেয়ে বড় পাইকারি রোড বাজার এখন প্রভাবশালীদের দখলে। দিনের পর দিন স্থানীয় প্রভাশালীরা দখলে নিয়ে নিজেরাই নিয়ন্ত্রন করছেন। গড়ে তুলেছেন বাজারের ভেতর একের পর এক বহুতল ভবন। জৌলুস হারিয়েছে বাজারের। এমন পরিস্থিতিতে জনপ্রতিনিধি অসহাত্বের কথা জানালেও পৌর মেয়র বলছেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা।
পৌর কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, স্বাধীনতার পর থেকেই রোড বাজারটি পরিচালিত হয়ে আসছে। ১৫ বছর আগেও হাটটি ইজারা দেয়া হয়েছিল ৫লাখ টাকায়। দখলের কারনে তা কমতে থাকায় গেল বছর ইজারা দেয়া হয়েছে মাত্র ৭০ হাজার টাকায়। এতে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
এ বাজারটি থেকে জেলার পাইকাররা সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্য ও গবাদিপশু কেনাবেচা করলেও এখন জৌলুস হারিয়েছে। বাজারের ভেতরে বাইরে ভবন গড়ে তোলায় দিন দিন জায়গা সংকটে পরে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে দুর-দুরান্তের ব্যবসায়ীরা। কমেছে রাজস্ব আয়। বাজারের ঐতিহ্য ফিরাতে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে এরই মধ্যে পৌর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে প্রচারনা ও তালিকা করে কয়েকবার চিঠি দিলেও কার্যত প্রদক্ষেপ থমকে আছে। এমন অবস্থায় স্থানীয়রা যথাযথ প্রদক্ষেপের দাবি জানান।
ইঞ্জিনিয়ার হাসিনুর রহমান সহ আরো অনেকেই বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে ঐতিহ্যবাহী রোড বাজারটি আজ কিছু প্রভাবশালী দখল করে অবৈধ ভাবে বাসা বাড়ি ও দোকান-পাট করেছেন। ভবন গুলো করার কারণে বাজারটি বাজার মনে হয়না। রোড বাজার দখলদারদের বিরুদ্ধে পৌরসভা কেন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না? দুর্বলতা কোন জায়গায়? দখলের কারনে সরকার মোটা অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আইন কি তাদের ছুইতে পারে না? নাকি আইনেই চেয়ে ওরা বড়? পৌর কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি দখলদারদের হাত থেকে ঐতিহ্যবাহী রোড বাজাড়টি উদ্ধার করে বাজারের জৌলুস ফিরিয়ে আনার।
দখলের বিষয়ে সংশ্লিস্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর একরামুদ্দৌল্লা সাহেব জানান, বছরের পর বছর বাজারকে নষ্ট করে ভবন গড়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। বাজারের ভেতর দ্বিতল ভবন গড়ে তুলেছেন ডাঃ মোঃ নুর আলম, মো. কামাল হোসেন, মো. গোলাম হোসাইন, ভুট্রা বাবু, শুকুর বিহারী, মো. সমসেদ আলী, মো. আব্বাস আলী, জাপান সাহেব, শাহজাহান খান, মো. মইনুদ্দীন সহ আরো অনেকেই।
আর সরকারি জমি দখল করে আছেন মো. মোকাররম হোসেন, মো. হযরত আলী, রহমান ক্যাশিয়ার ও তার ছেলেরা, মিরাজ তালুকদার, সালাম ও মতি মাষ্টার গং, ভুট্রা বাবু ও পলাশ গং, রিয়েল, রতন, রুমু তালুকদার, হামিদ ও আশরাফুল গং, মোঃ হালিম ও কুরাইশী গং, ডিম বাবু, মোঃ গোলাম হোসেন ও রাজ গং। তাদের বিরুদ্ধে কয়েকবার নোটিশ দেয়া হয়েছে কিন্তু তারা কেউ বিষয়টি আমলে নেয়নি।
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা বেগম জানান, বাজারের ভেতরে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে বেশ কয়েকবার বলা হলেও কেউ কথা শুনছেন না। দখলদারদের বিরুদ্ধে দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পৌর কর্তৃপক্ষ সু-নির্দিষ্টভাবে অবৈধ স্থাপনের তালিকা দিলেই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: