নারী ও শিশু নির্যাতন মামলাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে দু'পক্ষের সংঘর্ষে জাহাঙ্গীর আলম (৬০) নামের এক সাবেক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার তাঁতিবন্দ ইউনিয়নের বনগ্রাম বাজারের ভবানীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জাহাঙ্গীর আলম খন্দকার ভবানীপুর গ্রামের মৃত হাসান খন্দকারের ছেলে। তিনি ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে পাবনা সদর থানা থেকে পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
আহতরা হলেন- নিহত জাহাঙ্গীরের ভাই মতি খন্দকার, একই এলাকার আরফান মোল্লার ছেলে আয়েন উদ্দিন, নজিম উদ্দিনের ছেলে আব্দুর রহিম। আহত বাকিদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। এদের মধ্যে মতি খন্দকারের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ভবানীপুর গ্রামের সাবেক পুলিশ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম গ্রুপের সাথে একই এলাকার আশরাফ আলী গ্রুপের মধ্যে স্থানীয় একটি নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা নিয়ে বিরোধ চলছিল। এছাড়া মাস তিনেক আগে জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির সামনে জুয়া খেলছিল আশরাফ আলী গ্রুপের লোকজন। তিনি পুলিশকে ফোন করলে পুলিশ গিয়ে কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে যায়। এ নিয়েও বিরোধ ছিল।
এসব ঘটনার জেরে সোমবার দুপুরে উভয় গ্রুপের লোকজন বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রঘাতে জাহাঙ্গীর আলম গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এসব ঘটনার জেরে সোমবার দুপুরে উভয় গ্রুপের লোকজন বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রঘাতে জাহাঙ্গীর আলম গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সংঘর্ষে জাহাঙ্গীরের ভাই মতি খন্দকারসহ অন্তত ১০ আহত হন। আহতদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে মতি খন্দকারের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
ওসি বলেন, এখানে চরমপন্থির কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
সুজানগর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম জানান, হত্যার সঠিক কারণ জানা যায়নি। পুলিশ সঠিক কারন জানতে অনুসন্ধান চালাচ্ছে। সেইসাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
নিহতের ছেলে জুবায়ের খন্দকারের দাবি, ‘হামলাকারীরা চরমপন্থি দলের সদস্য। অবসর গ্রহণের পর এলাকার জুয়া খেলা নিয়ে প্রতিবাদ করে ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। পরে তিনি পেনশনের টাকা দিয়ে নতুন বাড়ি করতে গেলে চরমপন্থিরা ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। জুয়া খেলা ও চাঁদাবাজি নিয়েই এলাকার চরমপন্থি হিসেবে পরিচিত আশরাফ, জসিম মাস্টার, রাজা, সুমন, সোবহানসহ কয়েকজনের সাথে বিরোধ চলছিল।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: