জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার নেপথ্যে তৎকালীন মার্কিন দূতাবাস প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা।
সোমবার সকালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে নগরীর সিঅ্যান্ডবি মোড়ে বঙ্গবন্ধুর মু্র্যালে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে দলীয় নেতা-কর্মীদের তিনি শপথ বাক্য পাঠ করান।
জাতীয় এই রাজনীতিক বলেন, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যায় আমেরিকা জড়িত এই সত্য প্রমানিত হয়েছে। হত্যাকান্ডের এক মাস আগে থেকে প্রকাশ্যে সেনাবাহিনীর বিপথগামী সদস্যরা মার্কিন দূতাবাসে যাতায়াত করতো। এ বিষয়ে তৎকালীন গোয়েন্দা সংস্থাসহ বঙ্গবন্ধুর ৫০জন সামরিক অফিসার তাদের ভূমিকা কী ছিল? শুধুমাত্র ব্রিগেডিয়ার জামিলকে কেন জীবন দিতে হলো? ওই সময়ের মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা তারা বাড়িতেই ছিলেন, কেন বঙ্গবন্ধুর লাশের কাছে দৌড়ে আসেননি? এসব প্রশ্নের উত্তর আমরা চাই।
৩০ লাখ শহীদ ও ১৫ আগস্টের শহিদদের রক্ত একই ধারায় প্রবাহিত উল্লেখ করে রাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, যে আদর্শ নিয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার মূল ভিত্তি ছিল চার মূলনীতি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই ছিল বঙ্গবন্ধুর চেতনা। তিনি যেদিন বাহাত্তরের সংবিধান ব্যাখ্যা করেছিলেন, সেখানে কখনোই বলেননি, রাষ্ট্রের কোন ধর্ম থাকবে। সুতরাং রাষ্ট্রের কোন ধর্ম থাকার অর্থই হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর চেতনা থেকে বিচ্যুত হওয়া।
স্বাধীনতাবিরোধীদের সাথে উঠাবসা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সাথে বেইমানি, মন্তব্য করে ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম এ নেতা বলেন, বাংলাদেশে জামায়াত-ইসলামের রাজনীতি নিষিদ্ধ। তাহলে কী করে এই মাটিতে তাদের নাম শোনা যায়? কীভাবে তাদের নামে বিবৃতি আসে? শুনতে পাই, তাদের সাথে অনেকের উঠাবসাও হয়। এসব কোনভাবেই আমরা সঠিক মনে করি না। এগুলো মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচু্যতি ও বেইমানির সামিল।
১৪ দল নির্বাচনী নয়, আদর্শগত জোট, একথা স্মরণ করিয়ে বাদশা বলেন, বিএনপি-জামায়াতকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে আমরা ক্ষমতায় নিয়ে এনেছি। অনেকে বলেন, ১৪ দল নির্বাচনী জোট। ১৪ দল কোন নির্বাচনী জোট নয়, এটি আদর্শগত জোট। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকের জোট।
এটিকে নির্বাচনী জোট মন্তব্য করে, ১৪ দলের যে আদর্শ সেখান থেকে বিচ্যুত হওয়ার কোন সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না। এসময় ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পেছনের কুশিলব ও আয়োজনকারীদের সামনে আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত তদন্ত কমিশন দ্রুত গঠন ও কার্যকরী করতে জোর দাবি জানান।
এসময় রাজশাহী মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু, সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, জেলার সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক তোতা, মহানগর সম্পাদকম-লীর সদস্য আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু, সিরাজুর রহমান খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল মতিন, মনির উদ্দিন পান্না, নাজমুল করিম অপু, মহানগর সদস্য ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতিসহ দলের জেলা, মহানগর ও বন্ধু সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: