সন্ধ্যা নদীতে বালুবাহী বাল্কহেড ডুবিতে নিখোঁজ বাল্কহেডের সুকানী মিলন হাওলাদারের (৩৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
৮ আগস্ট বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সন্ধ্যা নদীতে ঢাকাগামী মর্নিং সান-৯ লঞ্চের ধাক্কায় বালুবাহী বাল্কহেড ডুবির ঘটনায় নিখোঁজের ঘটনায় ৫ দিন পরে ১২ আগস্ট শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে বাল্কহেডের সুকানী মিলন হাওলাদারের (৩৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বানারীপাড়ার মসজিদবাড়ি এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা সন্ধ্যা নদীর তলদেশে বাল্কহেডের মধ্য থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে। এসময় সেখানে স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। এর আগে দুর্ঘটনার পরের দিন ৯ আগস্ট বেলা পৌনে ১২টার দিকে বাল্কহেডের মধ্য থেকে নিখোঁজ অপর শ্রমিক ইঞ্জিন মিস্ত্রি কালামের (৫৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাদের দু’জনের বাড়ি পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলার নান্দুহার গ্রামে। এ বিষয়ে বানারীপাড়া থানার ওসি এসএম মাসুদ আলম চৌধুরী জানান, শুক্রবার সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে ডুবুরিরা মিলনের খোঁজে সন্ধ্যা নদীর দুর্ঘটনাস্থলে তল্লাশী চালাচ্ছিল। বিকেলে তারা তাকে জানায়,বাল্কহেডের ভিতরে মিলনের মরদেহ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ওসি আরও জানান, ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। মিলনের মরদেহ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিপন কুমার সাহা ।
প্রসঙ্গত,পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে গত ৮ আগস্ট সোমবার রাত পৌনে ৯টার দিকে বানারীপাড়ার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের মসজিদবাড়ি (দাসেরহাট) এলাকায় সন্ধ্যা নদীতে এমভি মর্নিংসান-৯ লঞ্চের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে বালুবাহী একটি বাল্কহেড ডুবে যায়। নিখোঁজ হয় বাল্কহেডের দু'শ্রমিক কালাম ও মিলন। সংঘর্ষে লঞ্চের সামনের দিকের ডানপাশে পানির স্তরের কিছুটা উপরে ছিদ্র হয়। এতে যাত্রীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে স্থানীয় প্রশাসন রাতে ওই লঞ্চের যাত্রা স্থগিত করে।
দুর্ঘটনাস্থলের অদূরে লঞ্চটি উজিরপুরের চৌধুরীর হাটে নোঙর করলে লঞ্চে থাকা আশপাশের বিভিন্ন উপজেলার দু'শতাধিক যাত্রী নেমে গন্তব্যে চলে যায়। এরপর শতাধিক যাত্রী লঞ্চে অবস্থান করে। এদিকে সংঘর্ষে এমভি মর্নিংসান-৯ লঞ্চের ছিদ্র হওয়া তলা সাময়িক মেরামত করে শতাধিক যাত্রী নিয়ে ৯ আগস্ট মঙ্গলবার সকালেই ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় । ৯ আগস্ট সকালে ডুবে যাওয়া বাল্কহেডের সন্ধান মেলে মসজিদবাড়ি গ্রামের একটি ইটভাটা সংলগ্ন সন্ধ্যা নদীর পানির তলদেশে।
ওই দিন বেলা পৌনে ১২টার দিকে ওই বাল্কহেডের ভেতর থেকে নিখোঁজ দু'শ্রমিকের মধ্যে ইঞ্জিন রুমের মিস্ত্রি কালামের (৫৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে পুলিশ তার মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
ময়না তদন্ত শেষে তার মরদেহ স্বরূপকাঠি উপজেলার নান্দুহার গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। তবে অপরজন বাল্কহেডের সুকানী মিলন সেদিন থেকেই নিখোজ ছিল। অবশেষ শুক্রবার বিকেলে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: