মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা আনন্দমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ে হামলার ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমানসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে দ্রুতবিচার আইনে মামলা হয়েছে।
গত (৩ আগষ্ট) বুধবার মানিকগঞ্জের আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আদালতে এই মামলা করে হরিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজিবুল হাসান রাজিব।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ জুলাই ছিলো ঝিটকা আনন্দমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পদে নির্বাচনের তারিখ। ওই পদের প্রার্থী হন স্থানীয় সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম এবং উপজেরা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান। নির্বাচনে মমতাজ বেগমের জয় নিশ্চিত মনে করে আসামীরা মমতাজ বেগমের সমর্থকদের মারধর এবং বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র ভাংচুর করে।
মামলায় উল্লেখিত, দেওয়ান সাইদুর রহমান ভোটার লেবু হাসানকে প্রকাশ্যে ভোট দিতে বলে। কিন্তু তিনি প্রকাশ্যে ভোট দিতে অস্বীকার করলে, আসামীরা লেবু হাসানসহ কয়েকজনকে মারধর করে। তাদের আত্মচিৎকারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ও নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা প্রশাসনের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামীরা প্রকাশ্যে অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শণ করে এবং শক্তির মহড়া দিতে থাকে।
অতঃপর তারা অস্ত্র উচিয়ে লেবু হাসানসহ অন্যান্যদের হত্যার হুমকী দিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র ভাংচুর করে। পুলিশ কায্যকর ভূমিকা পালন না করে নিরব থাকায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। একপর্যায়ে দেওয়ান সাইদুর রহমান তার হাতে থাকা লাইসেন্স করা শর্টগান দিয়ে ফরিদ মোল্লাকে গুলি করে। গুলিটি তার ডান ঘারে অপর আসামী সুমন মোল্লা বাঁশের লাঠি দিয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আজিম খানকে আঘাত করে। অপর আসামীরা চালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আব্দুল মজিদ, সেলিম মোল্লা, রাজিবুল হাসান রাজিব সহ ১২জনকে মারধর করে এবং তাদের কাছে থাকা টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়। এই মামলার সকল আসামীই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সইদুর রহমানের সমর্থক।
এদিকে, সভাপতি পদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই অভিভাবক সদস্যকে মারধরের ঘটনায় ২৭ জুলাই আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আদালতে মামলা করেন অভিভাবক সদস্য মো. মহিউদ্দিন মঞ্জু।
উক্ত মামলায় আসামী করা হয়েছে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিদুল ইসলাম, হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আজিম খান, হরিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. লুৎফর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান ওরফে ফিরোজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত সহ-সভাপতি সেলিম মোল্লা ও যুবলীগ নেতা ফরিদ মোল্লাসহ ৩৮জনের বিরুদ্ধে। এই মামলার সকল আসামীই মানিকগঞ্জ-২ (হরিরামপুর-সিঙ্গাইর) আসনের সংসদস সদস্য মমতাজ বেগমের অনুসারি।
নির্বাচনী ব্যালট পেপার ছিনতাই ও আইনশৃঙ্খলা অবনতির কারণে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন।
তবে এ ব্যাপারে হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: