পাবনা শহরের ইভিনিং টাচ আবাসিক হোটেল-১-এ অভিযান চালিয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার সময় ১০ জন প্রেমিক-প্রেমিকা জুটিকে আটক করা হয়েছে। তারা সবাই স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) দুপুরে শহরের প্রাণকেন্দ্র সোনাপট্টির প্রেসক্লাব গলির ইভিনিং টাচ আবাসিক হোটেল-১-এ এই অভিযান চালানো হয়। তাৎক্ষনিকভাবে আটককৃতদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি ডিবি পুলিশ।
পাবনা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, সেখানে অনৈতিক কর্মকাণ্ড হয় -এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় অনৈতিক কাজের সময় ৫ জন মেয়ে ও ৫ ছেলে মহ মোট ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। আটকৃতরা সবাই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। তাদেরকে পাবনা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযানের সময় হোটেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পালিয়ে গেছে। অনৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয় রোধে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাবনার আবাসিক হোটেলগুলো যেন অনৈতিক কাজের নিরাপদ স্থানে পরিণত হয়েছে। শহরের বেশিরভাগ হোটেলেই ঘণ্টা প্রতি উচ্চমূল্যে চুক্তিভিত্তিক ভাড়া দিয়ে চলছে এসব ব্যবসা। এতে খুব সহজেই অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া তরুণ-তরুণীরা। এছাড়াও পরকীয়া প্রেমিক-প্রেমিকরাও সহজেই অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। এ নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে প্রশাসনের নজরে আসে। এরপর থেকে শহরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে অভিযান চলছে।
অভিযান নিয়ে হোটেলের আশপাশের ব্যবসায়ীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। সোনাপট্টি এলাকার এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এই অভিযান নিয়ে এখানকার ব্যবসায়ীরা যে পরিমাণ খুশি হয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। এর আগে অনেকবার এখানে প্রশাসনকে ঢুকতে দেখেছি, কিন্তু কাউকে আটক বা কোনও না করেই চলে যেতে দেখিছি। এইবার প্রথম কাউকে আটক করা হলো। মনে হয় এই কিছু একটা হবে। এই জন্য পুলিশ সুপারকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
প্রেসক্লাব গলির আরেক ব্যবসায়ী বলেন, যে পরিমাণে উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েরা এখানে আসা-যাওয়া করে তাতে আমাদের মতো বিবেকমান মানুষদের জন্য সহ্য করা কঠিন। আমি প্রতিদিন তাহাজ্জুদের নাম পড়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি যেন, এই হোটেলে কিছু একটা ঘটুক। আল্লাহ মনে হয় আমাদের কথা শুনেছে। আর আমাদের পুলিশ সুপার স্যার যাওয়ার সময় আরেকটি ভালো কাজ করে গেলেন।
এর আগেও এই হোটেলটির আরেকটি শাখা শহরের মুনসুরাবাদ আবাসিক এলাকার ইভিনিং টাচ আবাসিক হোটেল-২-এ অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েক জোড়া প্রেমিক-প্রেমিকাকে আটক করেছিল ডিবি। অভিযানের সময় বন্ধ হলেও মালিকপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ার কয়েকদিন পরেই আবারও এসব হোটেলে অনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: