নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে রাজনৈতিক শত্রুতার জের ধরে শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ের ওয়াকওয়ে থেকে আনোয়ার হায়াত হিমেল (৩৫) নামে এক যুবককে চোখ-মুখ বেঁধে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে তুলে নিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে হারুনুর রশিদ (৫৫) নামে এক বিএনপি নেতা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার তালিকাভুক্ত দুধর্ষ ও কুখ্যাত সন্ত্রাসী সাহেব আলী (৩২) গংদের বিরুদ্ধে।
চিকিৎসা শেষে নির্যাতনের শিকার গুরুতর আহত আনোয়ার হায়াত হিমেল রবিবার (২৪ জুলাই) রাতে বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ৭/৮ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।
নির্যাতনের শিকার আহত আনোয়ার হায়াত হিমেল সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৫নং ওয়ার্ডের পশ্চিম কলাবাগ এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব মো: সালেহ হায়াত সিরাজ (খোকা) এর বড় ছেলে।
অভিযুক্তরা হলো, সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৪নং ওয়ার্ডের আটি ওয়াপদা কলোনী এলাকার মো: হারুনুর রশিদ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার তালিকাভুক্ত দুধর্ষ ও কুখ্যাত সন্ত্রাসী সাহেব আলী, হারুনুর রশিদের ছেলে মো. উৎস (১৮), নাসিক ১নং ওয়ার্ডের মিজমিজি তালতলা ক্লাব এলাকার আউয়াল মিস্ত্রির ছেলে মো. করিম (৩২), একই এলাকার মো: শামসু (৪০) ও মো. গাফ্ফার (৪০) সহ আরো অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন। এদের নামে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একাধিক অপরাধ কর্মকান্ডের অভিযোগ ও মামলা রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।
নির্যাতনের শিকার যুবক আনোয়ার হায়াত হিমেল ও তার এজাহার সূত্রে জানা যায়, হারুনুর রশিদের সাথে পূর্বের রাজনৈতিক শত্রুতা থাকায় গত শুক্রবার (২২ জুলাই) দিবাগত রাত অনুমানিক সাড়ে ১২ টার সময় আটি ওয়াপদা কলোনী নদীরপাড় সোহরাব মিলের সামনে থেকে বাসায় যাওয়ার পথে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা উল্লেখিত হামলাকারীরা পিস্তল ঠেকিয়ে চোখ মুখ বেধে জোরপূর্বক ভাবে তাকে হারুনুর রশিদের বাসায় নিয়ে যায়।
পরে তারা বাসায় নিয়ে চোখের বাধন ছেড়ে দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার শিকল দিয়ে বেধে লোহার রড, চাপাতি, চাকু, রামদা ও দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রসহ এলোপাথারিভাবে বেধকড় পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশ রক্তাক্ত জখম করে। বিশেষ করে হামলার নেতৃত্বদানকারী হারুনুর রশিদ লোহার পাইপ দ্বারা দুই পায়ের হাটুর নিচে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
অন্যান্য হামলাকারীসহ অজ্ঞাতনামা হামলাকারীরা চাকু, লাঠি সুটা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পোচ দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
এবপর্যায়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার তালিকাভুক্ত কুখ্যাত সন্ত্রাসী সাহেব আলী যুবক হিমেলের সাথে থাকা নগদ চৌদ্দ হাজার টাকা, হাতের আঙ্গুলে থাকা ৩০ হাজার টাকা মূল্যের একটি স্বর্ণের আংটি নিয়ে যায়।
এদিকে বাঁচার জন্য হিমেল ডাক-চিৎকার করলে হারুনের ছেলে উৎস তার মুখ চেপে ধরে ও অন্যান্য সন্ত্রাসীরা তাকে আবারও মারপিট করতে থাকে। পরে তাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে রেখে চলে যায়।
এ খবর পেয়ে গুরুতর আহত হিমেলের পরিবারের লোকজন হারুনের বাড়ী থেকে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নিয়ে চিকিৎসা করায়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুর রহমান মানিক জানান, এ ব্যাপারে আনোয়ার হায়াত হিমেল রবিবার রাতে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: