চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জের তেতুল শেখ কলেজের অধ্যক্ষ নির্যাতন ও ৬০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযুক্ত সভাপতি আব্দুল্লা শেখ বহাল তবিয়তে আছেন। ঘটনার পর এক মাস পেরিয়ে গেলেও তার বিরুদ্ধে কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা সম্পন্ন হয়নি। ফলে ওই কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন করে ক্ষোভ দানা বাধতে শুরু করেছে। এ বিষয়ে তেতুল শেখ কলেজের অধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র যশোর শিক্ষা বোর্ডে দাখিল করা হয়েছে।
তেতুল শেখ কলেজে গিয়ে জানা যায়, কলেজের সভাপতি আব্দুল্লা শেখ দীর্ঘদিন যাবৎ নানাভাবে শিক্ষক-কর্মচারীদের নির্যাতন করে আসছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় অধ্যক্ষ মো. মারুফুল হককেও তিনি নির্যাতন ও গালিগালাজ করেন।
গত ১৪ জুন বিষয়টির একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। আন্দোলনের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা গত ১৫ জুন সভাপতির অপসারণ দাবী করে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে। সেসময় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভূইয়ার আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করা হয়।
অধ্যক্ষ মো. মারুফুল হক জানান, সভাপতি আব্দুল্লা শেখ নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে শিক্ষক-কর্মচারীদের নানাভাবে নির্যাতন করতেন। অনৈতিক সুবিধা দিতে বাধ্য করতেন। এছাড়াও তিনি নিয়ম বহির্ভূতভাবে কলেজের ফান্ড থেকে ৬০ লাখ টাকা সরিয়ে নিয়ে নিজের নিকট আত্মীয়দের নামে ব্যাংকে রেখেছেন। সভাপতি কলেজের ৬০ লাখ টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যেই অধ্যক্ষকে চেক সই করতে বাধ্য করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৩ জুন কলেজের একাউন্ট থেকে ৬০ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়। ওইদিনই সোনালী ব্যাংক লিমিটেড সরোজগঞ্জ শাখায় সভাপতি আব্দুল্লা শেখের মেয়ে ফারহানা ইয়াছমিন, ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ফারজানা সুলতানা, বড় ভাইয়ের পুত্রবধু আছিয়া খানম ও আর্জিনা রহমানের নামে ১৫ লাখ টাকা করে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে সভাপতি আব্দুল্লা শেখ বলেন, কলেজ অধ্যক্ষ আমার নামে শিক্ষা বোর্ডে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। প্রশাসনিক তদন্ত শেষে বোর্ড প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। ৬০ লাখ টাকা আত্মসাতের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি কোনো টাকা আত্মসাৎ করিনি। কলেজের স্বার্থেই অলস পড়ে থাকা টাকাগুলো আমার পরিবারের সদস্যদের নামে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা হয়েছে। এ বিষয়ে রেজুলেশন আছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভূইয়া বলেন, ‘কলেজ অধ্যক্ষ শিক্ষাবোর্ডে অভিযোগ করায় শিক্ষাবোর্ড জেলা প্রশাসক মহোদয়কে লিখিতভাবে তদন্তের জন্য চিঠি দিয়েছে। বিষয়টি তদন্তের জন্য ইতিমধ্যে আমার উপর দায়িত্ব অর্পণের সিদ্ধান্তও হয়েছে। দু’একদিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত চিঠি আমার হাতে পৌছাতে পারে। চিঠি পাওয়ার পর আমি যথাযথভাবে আমার দায়িত্ব পালন করবো।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: