নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে মা ও তার শিশু সন্তানকে হত্যাকারীর সর্ব্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের দাবিতে মানববন্ধ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নবাসী।
বুধবার (১৩ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় উজানগোপিন্দী পশ্চিমপাড়া এলাকায় হত্যাকান্ডের শিকার রাজিয়া সুলতানা কাকলীর বাড়ির পাশে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে গ্রেপ্তার হওয়া সাদেকুর সাদীর সর্ব্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে কাকলীর চাচা শ্বশুর সাইফউদ্দিন কাজী সালফু তার বক্তব্যে বলেন, গ্রেপ্তারকৃত সাদীর সর্ব্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। সে এলাকায় সব সময় জুয়া খেলে। সে একজন খারাপ প্রকৃতির ব্যক্তি ছিল। সে কাকলী ও তার সন্তানকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।
স্কুল শিক্ষক আলাউদ্দিন বলেন, তালহা মনোহরদী মডেল স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। সে অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রছিল। প্রতিটি পরীক্ষায় সে ভালো রেজান্ট করতো। তার সৃম্মি মনে করে প্রতিদিন অন্যান্য শিক্ষকরাও চোখের পানি ফেলেন। এসময় তিনি তালহা ও তার মায়ের হত্যাকারীর সর্ব্বোচ্চ শাস্তির দাবী করেন।
স্থানীয় নার্গিস আক্তার বলেন, আমিও একজন মা। আমারও সন্তান রয়েছে। আমি বুঝি সন্তান হারানোর ব্যধনা। তালহা প্রতিদিন আমার ছেলের সঙ্গে খেলাধুলা করতো। তাকে আমি অনেক আদর করতাম। আজ সে নেই এটা মেনে নিতে পারছি না। ঘুমন্ত তালহাকে নৃসংশভাবে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এটা ভাবতেই শরীরির শিউরে উঠে। আমি হত্যাকারীর সর্ব্বোচ্চ শাস্তির দাবী করছি।
এদিকে তালহার নানী মামলার বাদী তাসলিমা বেগম বলেন, আমার মেয়ে ও তার সন্তানকে হত্যাকারীর সর্ব্বোচ্চ শাস্তির দাবি করছি।
প্রসঙ্গত. গত ২ জুলাই রাতে কাকুলির ঘরের দরজা খুলতে বলে সাদি। কাকুলি দরজা খুললে ভেতরে গিয়ে দেখতে পায় তার ছেলে তালহাকে ভাত খাওয়াচ্ছে। ভাত খাওয়ানোর পর তালহা ঘুমিয়ে যায়। এর পর সাদি কাকুলিকে আরেক রুমে ডেকে নিয়ে ১০ হাজার টাকা ধার চান। এক পর্যায়ে কাকুলির পায়ে ধরে অনুরোধ করেন।
এলাকার ভালো ছেলে হিসেবে পরিরিচিত হওয়া সাদিকে বিশ্বাস করে আলমারী খুলে কাকুলি দেখান। এ সময় রাজিয়া বলেন তার কাছে দেওয়ার মতো কোন টাকা নাই। তার কাছে মাত্র ১০০ টাকা আছে। আলমারী খুললে সাদি দেখতে পায় সেখানে কিছু স্বর্ণালঙ্কার রাখা রয়েছে। এর পর সাদি তার ভাবি কাকুলিকে পাশেই চেয়ারে বসতে বলেন।
তখন ওড়না দিয়ে কাকুলির গলা পেঁচিয়ে ধরলে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। এর পর ইস্ত্রি দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে ঘরে বটি দিয়ে গলা কেটে দেয় সাদি। তখন সাদি ভাবে কাকুলির ছেলেও হয়তো তাকে দেখে চিনে ফেলেছে। তাই ঘুমন্ত শিশু তালহাকেও গলা কেটে হত্যা করেন সাদি। এরপর কাকুলির আলমারী থেকে স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে চলে যান।
পরে পিবিআই তদন্ত করে ঘাতক সাদিকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। এবং কাকুলির আলমারী থেকে স্বর্ণালঙ্কারের কিছু সাদির ঘর এবং যাদের কাছে বিক্রি করেছে তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করে পিবিআই।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: