সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঢুকতে লাগে ২০ টাকার টিকিট!

আনোয়ার হোসেন আকাশ, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) | ১৩ জুলাই ২০২২, ০৭:৪২

সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁয়ের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০ টাকা প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা নিয়ে বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে

ঘটনাটি জেলার হরিপুর উপজেলার চরভিটা সরকারি প্রাথমিকবিদ্যালয়ে প্রবেশের জন্য প্রতিজনের নিকট থেকে ২০ টাকা মূল্যের টিকিট বিক্রির অভিযোগ উঠেছে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এরফান আলীর বিরুদ্ধে।

উপজেলাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১২ জুলাই) হরিপুর চরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালাবন্ধ। বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের পাশেই রয়েছে ছোট্ট একটি প্রবেশ পথ। টিকিট হাতে বসে আছেন এক আনসার সদস্য। বিদ্যালয়ে প্রবেশের জন্যে প্রতিজনের নিকট থেকে ২০ টাকা মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে টিকিট।

টিকিট ব্যবস্থার কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতা আনসার সদস্য দর্শন বলেন, চরভিটার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এরফান আলী আমাকে টিকিট বিক্রি করতে বলেছেন।

জানা গেছে, চরভিটা বিদ্যালয়ের মাঠ প্রাঙ্গণটি বেশ দৃষ্টিনন্দন ভবে সাজানো। পার্কের মতো সৌন্দর্যের কারণে আশপাশের মানুষ সেখানে ঘুরতে আসেন। উপজেলায় তেমন বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকায় ঈদ বা উৎসবের দিন প্রচুর মানুষ চরভিটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভিড় করে। এখানে এই সুযোগটাই কাজে লাগিয়ে অর্থ আয়ের চিন্তা থেকে প্রধান শিক্ষক টিকিটের ব্যবস্থা করেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

চরভিটা বিদ্যালয়ে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী আসিকুল ইসলাম আসিক, মরজিনা বলেন, চরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি দৃষ্টিনন্দন একটি প্রতিষ্ঠান। তাই আমরা এই বিদ্যালয়ে ঘুরতে এসেছি। কিন্তু বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রবেশ করতে ২০ টাকা দিয়ে টিকিট ক্রয় করতে হয়েছে, যা দুঃখজনক।

চরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এরফান আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বিদ্যালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে ২০ টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। বলেন, ঈদের দিন ২০ টাকা মূল্যে ২০০ টিকিট বিক্রি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঈদের তিন দিন পর্যন্ত বিদ্যালয় পরিদর্শনের ব্যবস্থা রাখার চিন্তাভাবনা আছে দর্শনার্থীদের চাহিদা বিবেচনায় দিন বাড়ানো হতে পারে।

হরিপুর উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার এম.এ.এস রবিউল ইসলাম বলেন, সরকারি বিদ্যালয়ে প্রবেশের জন্য কোনও প্রকার টিকিট বিক্রি করতে পারবে না। কী কারণে প্রধান শিক্ষক টিকিট বিক্রি করছেন, তা ঠিক বুঝতে পারছি না।বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বহিৃ শিখা আশা বলেন, আমাকে জানিয়েছিল ঈদের দুই দিন লোকজন আসবে কিছু টাকা উঠলে বাচ্চাদের খেলনা গুলো কিনবে৷ বিষয়টা আমি নিজে পরিদর্শন করে দেখব।

এই বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি ঠিক জানা ছিল না। হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সাথে কথা বলে বিষয়টি দেখা হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


জনপ্রিয় খবর