মোংলা উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নে খরমা কাটাখালি এলাকায় পূর্ব শুত্রুতার জের ধরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে মারাত্মক ও গুরুতর ঘটনার সংবাদ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষই রক্তাক্ত জখম হয়।
বৃহস্পতিবার (০৭ জুলাই) রাতে এ ঘটনায় দু'পক্ষের পাঁচজন কে মারাত্মক জখম অবস্থায় মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এনে ভর্তি করান তাদের স্বজনরা।
আহতরা হলেন, সুন্দরবন ইউনিয়নের খরমা কাটাখালি এলাকার হারুন হাওলাদার এর ছেলে আলম হাওলাদার (৩২) ও লিটু হাওলাদার (২২), মৃত রফেজউদ্দিন হাওলাদার এর ছেলে আজিজুর হাওলাদার (৫২), মইনুদ্দিন শেখ এর ছেলে নাইম শেখ (১৮) এবং মৃত লালন শেখ এর ছেলে লুৎফর শেখ (৫২)।
এর মধ্যে দুই জনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক হারুন হাওলাদার এর ছেলে আলম হাওলাদার (৩২) ও লিটু হাওলাদার (২২) এই দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা প্ররণ করতে বলেন।
সুন্দরবন ইউনিয়নের দিগরাজ বাজারের বাসিন্দা আহত নাইম শেখের পিতা মো. মঈনউদ্দীন শেখ বলেন, সপ্তাহ খানেক আগে হারুনের সাথে বাদাম কেনা নিয়ে আমার ছেলের সাথে ঝগড়া হয়। ছেলে নাইম শেখ বৃহস্পতিবার বিকালে বৈদ্যমারি থেকে ফুটবল খেলে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় হারুনের ছেলে আলম হাওলাদার ও রকিবুল হাওলাদার এবং মোতালেবের ছেলে ফারুক ও আজবাহার শেখ পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ওঁৎ পেতে থেকে আমার ছেলের উপর অতর্কিত এক ভয়াবহ রক্ত ক্ষয়ী হামলা চালায়। প্রতিপক্ষরা দেশীয় অস্ত্র দ্বারা হত্যার উদ্দেশ্যে আমাদের উপর হামলা চালায়। এসব কিছু ইউপি চেয়ারম্যান ইকরাম ইজারদারের নেতৃত্বে হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুন্দরবন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইকরাম ইজারদার বলেন, আমি ঈদের চাল দেওয়া নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, অফিস ছাড়াও অতিরিক্ত সময়ও আমি অফিসে ছিলাম। দফায় দফায় ফোনের মাধ্যমে জানতে পারলাম বড় আকারে গ্যঞ্জাম হচ্ছে। ঘটনাস্থলে দ্রুত প্রশাসন পাঠানোর জন্য বিষয়টি আমি সার্কেল এসপি ও ওসি কে জানাই। আমি প্রশাসনের মাধ্যমে জানতে পারি, সপ্তাহ খানেক আগে এক বাদাম দোকানদারের দাড়ি উৎপাটন করেছে এই মইনুদ্দিন গ্রুপ। পরে এই বিষয়ে একটা অভিযোগ হইছে, যদিও এফআইআর হয় নাই। কেন অভিযোগ করলো এইটা নিয়ে গ্যঞ্জাম হয়। একটা দোকানে আগুনও লাগায় তারা। এটা আমি পুলিশের কাছ থেকে জানতে পারি। পরে আমি ভিক্টিমের কাছ থেকে শুনতে পারি। দুইজনের কথার সাথে মিল আছে। তবে মঈনউদ্দীন শেখ উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ ঘটনা ঘটিয়ে আমার ওপর দায় চাপাচ্ছেন।’
এলাকাবাসী পুলিশ প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়ে বলেন এরকম জঘন্যতম, বর্বরোচিত ও রক্ত ক্ষয়ী সংঘর্ষের তীব্র নিন্দা জানাই এবং একই সাথে এই জঘন্যতম অপরাধের সাথে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর হস্তে দমন সহ বিচারের দাবি জানাই।
আজ শুক্রবার (৮ জুলাই) দুপুরে এ মামলায় তিন জনকে আটক করে মোংলা থানা পুলিশ।
এই বিষয়ে মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, যারা আহত হয়েছে তার বড় ভাই বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এ মামলায় তিন জনকে আটক করে বাগেরহাট কোটে পাঠানো হয়েছে এবং বাকি আসামিদের ধরতে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: