দুই দিন পর শুরু হবে ঈদুল আযাহা। এই ঈদকে সামনে রেখে বান্দরবানের জমে উঠেছে কুরবানী গরুর হাট বাজার। বিভিন্ন স্থান থেকে খামারিরা বাজারের নিয়ে এসেছেন নানান সাইজের গরুর। পশুর হাট ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা, নির্বিঘ্নে যাতায়াত, সহ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট বাজার কর্তৃপক্ষ। তবে গতবারের চেয়ে এবারে গরুর দাম বেশী বলছেন ক্রেতারা। অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছে গরু নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণের গরুর দামটি কিছুটা বেড়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বান্দরবান শহরে কালাঘাটা ও বালাঘাটা গরুর বাজার হাটে একের পর এক বিভিন্ন রঙের গরুর আগমন ঘটেছে। পাহাড়ের দীর্ঘদিন ধরে খামারের পালিত গরু ও নিয়ে এসেছে হাট বাজারের। তবে গত বছর করোনা কারণের দামের মোটামোটি থাকলেও এবারের সেটি উল্টো চিত্র। হাটের গরুর দামের চওড়া হওয়াতেই ক্রেতারা কিনতে হিমসিম খাচ্ছে। অন্যদিকে গরুর প্রয়োজনীয় খাবারের দাম বেড়ে যাওয়াটেই খামারিরা দাম ধরে রেখেছে প্রায় দ্বিগুন।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, এ বছর জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা আছে ৪৬ হাজার ৭০টি। এর মধ্যে জেলার খামারগুলোতে প্রস্তুত আছে ২৫ হাজার ৬১৭টি গরু, মহিষ ও ছাগল। বেশি রয়েছে ২১ হাজারের বেশি কোরবানিযোগ্য পশু । গত বছরের চাহিদা বিবেচনায় এ বছরের চাহিদা নির্ধারণ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে বান্দরবানের কোরবানির পশুর হাটগুলোতে অন্তত ৩০০ কোটি টাকার পশু বেচাকেনা হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বালাঘাটা বাজারে ইজারাদার আবু খায়েব বলেন, গতবারের চেয়ে এইবারে গরু বড় গুলো ইজারা ধরা হয়েছে ১৫০ টাকা, মাঝারী ধরা হয়েছে ১০০ টাকা ও ছোট সাইজ সহ ছাগল ও ধরা হয়েছে ৫০ টাকা। গতবারের তুলনায় এইবারে ইজারা দাম ও গরুর দাম স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান তারা।
এদিকে গরুর হাট বাজারের নেয়া হয়েছে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পশুর হাটে জাল টাকার বিস্তার রোধেও নিয়েছেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। জাল নোট সনাক্তকারী মেশিনও রাখা হয়েছে পশুর হাটে। বালাঘাটা ও কালাঘাটা পশুর হাটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ট্রাফিক পুলিশ, সাদা পোশাকে এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ মাঠে রয়েছে। পশুর হাটে সার্বিক পরিস্থিতি রয়েছে স্বাভাবিক। তবে শেষ মুর্হুতে ভালোই জমে উঠছে কোরবানির পশুর হাট।
খামারি কলিম মোল্লাহ জানান, গরুর প্রয়োজনীয় খাবার গুলো দাম বাড়াতেই গরুর দাম ও খানিকটা বেশী ধরা হয়েছে।
খামারি উসাই মং মারমা জানান, হাট বাজারের দুটি গরু নিয়ে এসেছি। গতবারে গরুর দাম কম হওয়াতেই বিক্রি করতে পারেনি। এবার আশা করি নির্দিষ্ট দামেই গরু দুটি বিক্রি হবে।
ক্রেতা আমির হোসেন বলেন, গতবারের তুলনায় এবারে গরুর দাম দ্বিগুন বেশী। গরুর পাশাপাশি খাসির ও। এত দাম ধরে রাখলেও এবছরের মনে হয় কুরবানী দিতে পারবো নাহ।
বান্দরবান সদর উপজেলা পশু সম্পদের কর্মকর্তা ডা: সুকান্ত কুমার সেন বলেন, পশুর হাট বাজারে মেডিকেল টিম দায়িত্ব পালন করছে। যেগুলো অসুস্থ গরু সেগুলোকে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি।
বান্দরবান সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, হাট বাজারে পুলিশ মোতায়েন করা আছে। যাতায়াত নির্বিঘ্ন করার জন্য আমরা কাজ করছি। এখানের শৃঙ্খলা যাতে বজায় থাকে সেদিকে সজাগ আছি।
বান্দরবান জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.মোহাম্মদ গোলামুর রহমান বলেন, আমাদের হিসেবে এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত পশু রয়েছে। এবার অন্তত ৩০০ কোটি টাকার পশু বেচাকেনা হবে বলে আমরা আশা করছি। তবে টাকার পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: