ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের সদরবেড়া গ্রামে আদিপত্ত বজায় রাখতে হামলার ঘটনায় এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এঘটনাকে কেন্দ্র করে দুটি মামলা দায়েরের ঘটনায় আতংকে সময় পার করছেন গ্রামের কয়েকশত নারী ও শিশুরা।
শনিবার সরোজমিনে গেলে নারীরা তাদের আর্তি জানান। যদিও পুলিশের দাবী পরিস্থিতি বর্তমানে পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।
মামলার বিবরণ ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, এলাকায় আদিপত্ত বিস্তারকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের আরেফিন খানের সাথে সালাম শেখের পক্ষের বিরোধ চলে আসছিলো পুর্বে থেকেই। গত ২৮ জুন রাতে আরেফিন খান তার পক্ষের ৭/৮ জনকে নিয়ে কোরবানী সংক্রান্ত একটি সভা শেষে সালাম শেখের বাড়ীর সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় পুর্বে থেকে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে থাকা ২০-২৫ জন লাঠি সোটা, শরকী, রামদা ও নানা ধরনের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে এলাপাথাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে। এতে আরেফিন খান, নিরু শেখ, রেজাউল খাঁন, নাঈম শেখ, হারুন চৌধুরীসহ কয়েকজন গুরুত্বর আহত হন। আহতদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। এদের মধ্যে অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় আরেফিন খানকে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আরেফিনের জখমের বর্ণনা দিতে গ্রিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কুপিয়ে আরেফিনের পায়ের হাড় কেটে ফেলা হয়েছে, যা সামান্য কিছু অংশ চামড়ার সাথে ঝুলে রয়েছে।
মামলার বাদী বাবুল খান জানান, হামলাকারীরা পুর্ব প্রস্তুতি নিয়েই এ হামলা চালায়। তিনি দাবী করেন, এ ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে হামলাকারীরা ওই উপজেলা এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যাক্তিকে দিয়ে চাপ প্রয়োগ করে আহতদের স্বজনদের নামে হামলার নাটক সাজিয়ে পাল্টা মামলা দায়ের করেছে। যে কারণে আহতদের স্বজনরাও এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
এদিকে এই দুটি মামলাকে কেন্দ্র করে মামলার আসামীগণসহ উভয় পক্ষের পুরুষ সদস্যরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ফলে বাড়ীতে অবস্থান করা নারী ও শিশুরা আতংকের মধ্যে সময় পার করছেন।
ওই গ্রামের নারী সেলিনা আক্তারসহ কয়েকজন জানান, হামলাকারীরা পাল্টা হামলার মামলা দায়ের করে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, এরই মধ্যে কয়েক বার হামলার চেষ্টা করেছে, এমনকি বাড়ীঘরে এসে নারীদেরও হুমকী ধামকী দিয়ে গেছে। এসব নারীরা তাদের ও পরিবারের শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চত করার দাবী করেছেন।
সংশ্লিষ্ট তালমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন জানান, হামলার পর থবর পেয়ে আরেফিন খানের পক্ষকে প্রতিশোধমূলক কোনো কিছু না করার জন্যে নিবৃত রেখেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনা জরুরী বলে জানান তিনি।
নগরকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হাবিল হোসেন জানান, খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্তমানের ওই এলাকা পুলিশের নজরদারীতে রয়েছে। মামলার এহাজারভুক্ত আসামী সালাম শেখকে আটক করা হয়েছে, অন্যদেরও আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: