মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে বিকট শব্দ করে বাইক রেসে বের হয় তরুণেরা। ভয়ানক স্পিড সঙ্গে বিকট শব্দ পথচারীদের মনে কিছুটা হলেও আতঙ্ক সৃষ্টি করে। বাইকচালকদের হেলমেট পরে চলতে হয়, সেখানে এই বেপরোয়া বাইকারদের বেশিরভাগ হেলমেট ছাড়া দিব্বি বেপরোয়াভাবে পুরো এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। হর্ন ‘না’ বাজানোর জন্য সেখানে বলা হয়েছে সেই হাসপাতালের সামনেও হর্ণ বাজানো নিয়মিত ঘটনা।
স্থানীয়রা জানান, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর - বলড়া সড়ক, হরিরামপুর - ঝিটকা - মানিকগঞ্জ সড়কে সকাল বিকেল দু'বেলা চোখে পড়বে বেপরোয়া বাইকারদের। এর আগে হরিরামপুরের পাটগ্রাম স্কুল মাঠে পাশে সড়কে ট্টাকের সাথে সংঘর্ষে বাইক চালক মারা গেছেন। বাইক চালকের অনেক বেশি গতি থাকায় নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি বাইকার। এছাড়া রিকশা চালক, পথচারীদের ধাক্কা দেয়া, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে নিয়মিত। দুদিন আগে হরিরামপুর রিকশা চালক সমিতির সভাপতি আব্দুস সালাম কে ধাক্কা দেয় বেপরোয়া বাইকার। গুরুতর আহত অবস্থায় মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন।
হরিরামপুর শ্যামল নিসর্গ পরিবেশ সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি পলাশ সূত্রধর বলেন, বেপরোয়া বাইকারদের কারণে রাস্তায় বের হওয়া যায় না। বেপরোয়া চালকেদের বেশিই তরুণ। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছে।
হরিরামপুর উপজেলা সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবুল বাশার সবুজ বলেন, বেপরোয়া বাইকাররা নিজে দুর্ঘটনার স্বীকার হওয়ার পাশাপাশি পথচারীদেরকেও আহত করছেন। দুদিন আগে রিকশা চালক সমিতির সভাপতিকেও ধাক্কা দিয়ে গুরুতর আহত করেছে। এছাড়া ঝিটকা গোয়ালবাগ এলাকায় কয়েকজন বাইকার দুর্ঘটনায় নিহতও হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করছি।
হরিরামপুর থানা ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম বলেন, দু-একদিনের মধ্যে অভিযান পরিচালনা করে দ্রুত গতিতে চালানো বাইকারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দ্রুত গতিতে চালানো বাইকারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রশঙ্গত, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এআরআই) বলছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে ২৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এআরআই আরো বলছে, সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। যেমন ২০২০ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ছিল সাড়ে ২২ শতাংশ। ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৩ দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যদিকে ২০২০ সালে পথচারী মৃত্যুর হার ছিল ২৯ দশমিক ৯। ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩০ দশমিক ৬ শতাংশ। সামগ্রিক বিবেচনায় আগের বছরের তুলনায় ২০২১ সালে সড়ক দুর্ঘটনা ৫ শতাংশ বেড়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: