নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে এক ইউপি চেয়ারম্যান এবং ইউপি সদস্যের ওপর হামলার ঘটনায় বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার ২৪ অনুসারীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (৬ জুন) রাতে হামলার শিকার ইউপি চেয়ারম্যানের পিতা আনিছল হক বাদী হয়ে মারধর,হত্যার চেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনে কোম্পানীগঞ্জ থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে কাদের মির্জার অনুসারী এবং চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ওমর ফারুক সবুজের আপন ছোট ভাই রহিম ওরফে রনিকে (৩৫)। এছাড়াও মামলার ২২নং আসামি করা হয়েছে কাদের মির্জার অন্যতম অনুসারী আওয়ামীলীগ নেতা ফখরুল ইসলাম সবুজকে। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ৪-৫জনকে।
হামলার শিকার ইউপি চেয়ারম্যান মো.হানিফ সবুজ (৫০) উপজেলার ৪নং চরকাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ৭নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শেখ ফরিদ খোকন (৪৫)।
তারা সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের অনুসারী। অপরদিকে,হামলাকারী আওয়ামীলীগ নেতা ফখরুল ইসলাম সবুজ ও রহিম ওরফে রনি এবং প্রদীপ,দুলাল,খালেদ সাইফুল্যাহ,লাভলু,মিজানুর রহমান ওরফে পেট কাটা মিজান তারা মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
এর আগে গত সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী বিল্লা বাড়ির সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার হানিফ সবুজ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইউপি সদস্য খোনকসহ তিনি বাড়ি যাওয়ার পথে বিল্লা বাড়ির সামনে তাঁর মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে হকিস্টিক,লোহার রড,হাতুড়ি দিয়ে অতর্কিত আক্রমন চালিয়ে আমার একটি হাত-পা ভেঙ্গে দেয় এবং মাথা ফাটিয়ে দেয় কাদের মির্জার অনুসারী ফখরুল ইসলাম সবুজ ও রহিম ওরফে রনি এবং প্রদীপ,দুলাল,খালেদ সাইফুল্যাহ,লাভলু,মিজানুর রহমান ওরফে পেট কাটা মিজানসহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা। মামলায় বলা হয়েছে,গত ইউপি নির্বাচনে ফখরুল ইসলাম সবুজ চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করে বর্তমান চেয়রম্যান হানিফ সবুজের কাছে পরাজিত হয়। এরপর থেকে মামলার প্রধান আসামি রনি ইউপি চেয়ারম্যান হানিফ সবুজকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় গত সোমবার দুপুরে রনি প্রথমে চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করে গুলি চালায়। গুলি লক্ষ্য ভ্রষ্ট হলে হামলাকারীরা তাকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে দেয়। এ সময় হামলাকারীরা চেয়ারম্যানের পকেট নগদ ৮০হাজার টাকা ও স্যামসাং মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেয় বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়। বর্তমানে আহত ইউপি চেয়ারম্যান ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের মির্জা অনুসারী আওয়ামীলীগ নেতা মো.ফখরুল ইসলাম সবুজ বলেন, তিনি এ হামলার সঙ্গে জড়িত নেই।
বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জা ইউপি চেয়ারম্যান হানিফ সবুজ এবং একজন সদস্যের ওপর নিজের অনুসারীদের হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন । তিনি বলেন, স্থানীয় একটি বিরোধ নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর হামলা হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। যাঁরা হামলা করেছেন, তাঁরা কেউই তাঁর অনুসারী নন। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
আব্দুল কাদের মির্জা বসুরহাট পৌরসভার মেয়র এবং আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের আপন ছোট ভাই।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.সাদেকুর রহমান মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি আরো বলেন,পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: