চিকিৎসা নিতে আসা একাধিক রোগীর সাথে অসদাচরণসহ হুমকি ধামকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক আল-আমিন হোসেনের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (০৭ জুন) সকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভগে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী রোগীরা বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দেয়ার জন্য গেলে তিনি কার্যালয়ে না থাকায় ফিরে যান।
ভুক্তভোগী রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে তারা চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রুবেল আহমেদ কে খোঁজ করতে থাকেন। এ সময় রুবেল জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত ছিলেন। জানতে পেরে রোগীরা সেখানেই চিকিৎসা নিতে আসেন। হঠাৎই সেখানে উপস্থিত হন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক আল-আমিন হোসেন।
তিনি এসেই রোগীরা বহির্বিভাগে না গিয়ে এখানে কেন এসেছেন বলে ধমকাতে থাকেন। রোগীরা তাকে এভাবে কথা বলতে নিষেধ করলে তিনি আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তিনি সেখানের কর্তব্যরত উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রুবেল আহমেদকেও ধমকাতে থাকেন। এক পর্যায়ে সেখান থেকে তিনি চলে যান। এরপর ভুক্তভোগী রোগীরা বিষয়টি জানাতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কক্ষে গেলেও তিনি না থাকায় তারা ফিরে যান।
অসদাচরণের শিকার উপজেলার পাথরঘাটার বাসিন্দা নীলা খাতুন বলেন, আমার মেয়ে জন্মের পর থেকে যে কোনো শারিরিক সমস্যায় রুবেলের পরামর্শ নেই। আউটডোরে তিনি না থাকায় এখানে এসেছি। কোনো সমস্যা থাকলে উনি (আল-আমিন) বলতে পারেন। এভাবে একজন ডাক্তার রোগীর সাথে কথা বলেন কিভাবে? একই অভিযোগ করেন সেখানে উপস্থিত রোগী তুলি সরকার, জীবন সরকার, আশরাফুল ইসলাম, আশা রাণী ছাড়াও অনেকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভাঙ্গড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটা সময় চিকিৎসকের বেশ সংকট ছিলো। সেই দীর্ঘ সময়ে উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসাররা রোগীদের চিকিৎসা দেয়ায় এদের রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। মেডিকেল অফিসারদের সাথে বিষয়টি নিয়ে উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারদের একটা মতবিরোধ বেশ কিছুদিন ধরে চলে আসছে।
অভিযোগ রয়েছে, এক সপ্তাহ আগেও এমন ঘটনা ঘটেছিলো বিষয়টি তখন তারা নিজেরাই ধামাচাপা দেয়। এছাড়া অভিযুক্ত আল-আমিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের পরপরই এলাকার কিছু রাজনীতিবিদধের সাথে উঠাবসা শুরু করেন। এরপর থেকেই তিনি বেপরোয়া আচরণ শুরু করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার একাধিক সহকর্মীও তার অসদাচরনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মুঠোফোনে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত চিকিৎসক আল-আমিন হোসেন অফিস চলাকালীন সময় ছাড়া কথা বলতে পারবেন না বলে গণমাধ্যমকর্মীর ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
ঘটনার বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার হালিমা খানম বলেন, বিষয়টি খুবই ন্যাক্কারজনক। ব্যাক্তি নামে রোগী একজনের চিকিৎসকের কাছে আসতেই পারেন, কিন্তু একজন ডাক্তার রোগীর সাথে এমন অচরন করতে পারেন না। বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন বলে জানা। এ সময় তিনি এ সংক্রান্ত নিউজ না করতে অনুরোধ করেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: