প্রকট আকার ধারণ করছে ফরিদপুরের ডায়রিয়া পরিস্থিতি। গত এক সপ্তাহ ধরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ভবনের মেঝে ছাড়িয়ে রোগীদের এখন হাসপাতাল অভ্যন্তরের গাছের নিচে ও রাস্তার পাশে অবস্থান করতে হচ্ছে। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুন বেশী রোগী অবস্থান করায় স্বল্প সংখ্যক জনবল দিয়ে রোগী ব্যবস্থাপনা করতে হচ্ছে, অপরদিকে সেবা নিয়ে নানা অভিযোগও রয়েছে রোগী ও তাদের স্বজনদের।
রাত ১২টা থেকে শুক্রবার সকাল ১১টা পর্যন্ত ভর্তি হয়েছেন ৫৫জন রোগী, আর ২৪ ঘন্টায় ভর্তির সংখ্যা ১৩০ ছাড়িয়ে গেছে। যদিও ১০০ শয্যার ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালটিতে ডায়রিয়ার রোগীদের জন্যে বরাদ্দকৃত বেডের সংখ্য ১০টি। আর তাই ডায়রিয়া ওয়ার্ড ছাড়াও অন্যান্য ওয়ার্ডের কক্ষের মেঝে ছাপিয়ে ভবনের সামনের গাছের নিচে ও সড়কের পাশে অবস্থান করতে হচ্ছে রোগীদের।
এদিকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের রয়েছে নানা অভিযোগ। প্রয়োজনীয় সেবা ও ঔষুধ সরবরাহ করা হচ্ছেনা জানিয়ে অনেকেই জানান, পাতলা পায়খানা না কমলেও বাধ্যতামূলকভাবে রিলিজ করে দেয়া হচ্ছে।
যদিও কর্তব্যরত সেবিকা ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, রোগীদের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সেবিকাদের দাবী, শতাধিক রোগীর বহর সামলাতে নিযুক্ত রয়েছেন মাত্র চারজন নার্স, চারজন সহযোগী।
কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মো. তানজিদুল ইসলাম জানান, শুক্রবার ভোররাত থেকে হঠাৎ রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় যেখানে যে পারছে অবস্থান করছে, আমরা সেখানেই সেবা দিচ্ছি। তিনি আরো জানান, জোর পূর্বক ছাড়পত্র নয়, বরং যাদের শারীরিক অবস্থা ভালো আছে তাদের বাড়ীতে থেকে নিয়মমত সেবা নিতে বলা হচ্ছে। অন্যথায় এ রোগ আরো ছড়িয়ে পড়তে পারে।, শারীরিক অন্য কোনো সমস্যা না থাকলে বাড়ীতে থেকে স্যালাইন গ্রহনের পাশাপাশি স্বাভাবিক খাবার খেলে দুই থেকে তিন দিনেই সুস্থ হয়ে উঠবেন।
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, হঠাৎ রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় জায়গায় সংকুলান হচ্ছে না। ১০০ শয্যার হাসপাতালে এই মুহুর্তে ডায়রিয়ায় ভর্তি রোগীর সংখ্যাই রয়েছে ১০৮জন। অন্যান্য রোগীতো রয়েছেই। এই পরিস্থিতিতে করণীয় বের করে সবাইকে সেবা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি জানান, ঔষুধের কোনো সংকট নেই, তবে হঠাৎ চাপ বাড়ায় স্যালাইনের কিছুটা সংকট থাকলেও আজকের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, ফরিদপুরে ৭৫০ শয্যার একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থাকলেও শুধুমাত্র ১০০ শয্যার ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালেই ডায়রিয়া রোগীদের সেবা দেয়া হয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: