মানবিক বোধ থেকেই ১৪১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সদ্য সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান।
শনিবার (০৮ মে) বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, আমি আগে থেকেই বলেছি এই নিয়োগগুলো হওয়া দরকার ছিল। ২০১৩ সালের পর ২০২১ এই ৮ বছরে কোনো নিয়োগ হয়নি। আমরা নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিলাম। হঠাৎ করে এর মধ্যে করোনা চলে আসে। আমরা তখন নিয়োগ বন্ধ করে দেই। এরপর ক্যাম্পাসে গুঞ্জন শোনা যায় কিছু শিক্ষকের মুখে। তারা বলতে থাকেন যে এ নিয়োগ দেওয়া যাবে না, মন্ত্রণালয় থেকে নিষেধাজ্ঞা আসবে। সেটা অবশেষে সত্য হলো। ডিসেম্বরের ১৩ তারিখ সকালে আমার কাছে ইমেইল আসে। আমি বিষ্মিত হলাম। যারা ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছিল তারা কীভাবে জানলো যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে? গুঞ্জনটা সত্যে পরিণত হলো, আমি তাদের বলেছি এই কথা।
তিনি আরও বলেন, আমরা যখন ভাইভা নিব তখন নিষেধাজ্ঞা আসে। করোনার জন্য স্থগিত রাখি। ২০০টি পদে আমরা বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম, যারা প্রার্থী ছিল তাদের সমস্ত কিছু হয়ে গিয়েছিল। শুধু ভাইভা বাকি ছিল। সুতরাং তারা এটা পাওয়ার দাবি রাখে।
অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান, আমি মনে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শুধু এই নিয়োগ না, আরও নিয়োগ দিতে হবে। না দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মুখ থুবড়ে পড়বে।
তিনি বলেন, কিছু শিক্ষক শুরু থেকেই বিরোধিতা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় অচল করার, স্বাভাবিক কাজকর্ম চলতে না দেওয়ার। সেটাকে উৎসাহিত করা হয়েছে।
মানবিক কারণে এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে রাবির সদ্য সাবেক এই উপাচার্য বলেন, এখানে যারা এ নিয়োগটা ডিজার্ব করে তারাই পেয়েছে। আমি মানবিক কারণে তাদের নিয়োগ দিয়েছি। তাদের প্রত্যেকেই অনার্স-মাস্টার্স পাস। তারা একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩য় শ্রেণির একটা চাকরি করবে, আমি মনে করি এটা যৌক্তিক। তারা আওয়ামী পরিবারের সন্তান। তাদের ক্রমাগত দাবিতে আমি মানবিক বোধ করেছি তাদের চাকরি পাওয়া উচিত। তাদের চাকরি দিয়েছি, কেউ আমাকে বলেনি।
এর আগে গত ৬ মে (বৃহস্পতিবার) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান তার মেয়াদের শেষ কার্যদিবসে একসঙ্গে ১৪১ জনকে নিয়োগ দেন। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এই নিয়োগকে অবৈধ উল্লেখ করে সন্ধ্যায় তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শনিবার (০৮ মে) তদন্ত কমিটির সদস্যরা ক্যাম্পাসে এসে বর্তমান উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত), সাবেক উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও নিয়োগের সঙ্গে সংশিষ্ট সকলের সঙ্গে বৈঠক করেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: