চুয়াডাঙ্গায় দীর্ঘদিন ধরে অননুমোদিত ছুটিতে রয়েছেন দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষক। এদের মধ্যে একজন রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে অন্যরা কোথায় আছে তা সঠিক বলতে পারেননি কেউ। ফলে শিক্ষক সংকটে বিপাকে পড়েছে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে প্রশাসন।
অভিযুক্তরা হলেন, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাজরাহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিগার সুলতানা, সহকারি শিক্ষক নীনা শাহরিয়ার এবং ভিমরুল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক নিপা শাহরিয়ার। নিনা ও নিপা দুই বোন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাজরাহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিগার সুলতানা ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর তিন মাসের চিকিৎসাজনিত ছুটির একটি দরখাস্ত বিদ্যালয়ে রেখে যুক্তরাষ্ট্রে যান। দেশে না ফিরেই ২০১৯ সালের ১১ মার্চ থেকে আরো দুই মাসের চিকিৎসাজনিত ছুটির একটি দরখাস্ত পাঠান উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে। এভাবে ২ বছর ৯ মাস ৮ দিন অননুমোদিত ছুটি কাটিয়ে ২০২১ সালের ২১ ডিসেম্বর বিদ্যালয়ে যোগ দেন তিনি। এ অবস্থায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার লিখিত পত্রের আলোকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিগার সুলতানার বেতন গ্রেড নিম্নধাপে অবনমিত করে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রে অসুস্থ মায়ের সাথে দেখা করার জন্য ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর থেকে আবারও শর্তসাপেক্ষে ৬০ দিনের ছুটি পান তিনি। কিন্তু শর্ত অনুযায়ী তার যোগদানের সময় চলতি বছরের ২৭ মে’র পর থেকে অদ্যবধি বিদ্যালয়ে আসেননি তিনি।
একই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক নীনা শাহরিয়ার ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে কোন প্রকার ছুটি ছাড়াই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত আছেন। সহকর্মিদের মতে তিনি স্বামীর সাথে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তবে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে একাধিকবার তার বাড়ির ঠিকানায় গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। ইতিমধ্যেই অনুপস্থিতির বিষয়ে পত্র মারফত কৈফিয়ত তলব করা হলেও তার জবাবও মেলেনি।
অপরদিকে, নীন শাহরিয়ারের বোন ভিমরুল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক নিপা শাহরিয়ার গত বছরের ৯ অক্টোবর থেকে করোনা বিষয়ক চিকিৎসাজনিত ছুটি নেন। এরপর ১১ নভেম্বর আরো ছয় মাসের ছুটি বর্ধিত করেন। এরপর আর বিদ্যালয়ে আসেননি। তিনি বর্তমানে কোথায় আছেন সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উম্মে ছালমা।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার উত্তম কুমার কুন্ডু জানান, অননুমোদিত ছুটিসহ সরকারি চাকরি বিধি লংঘনের কারণে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অভিযুক্ত শিক্ষকদের অনুপস্থিতির শুরু থেকেই বেতন-ভাতা স্থগিত করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভূইয়া বলেন, ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিষয়ে তদন্ত করে জেলা শিক্ষা অফিসারকে পত্র দেয়া হয়েছে। তাতে চাকুরি বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।
এসব বিষয়ে অভিযুক্তদের মোবাইলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: