হরিরামপুরে জাতীয় শোক দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনে অনিয়ম

সায়েম খান, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি | ১৭ আগষ্ট ২০২২, ০০:৩৭

সংগৃহীত

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের বিভিন্ন স্থানে জাতীয় পতাকা উত্তোলনে অনিয়ম দেখা গেছে। জানা যায়, দুইটি ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ম লঙ্ঘন করে একই দন্ডে কালো পতাকার নিচে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

এছাড়াও অন্যান্য ইউনিয়ন পরিষদসহ আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়েও দেখা যায়, আলাদা দন্ডে জাতীয় ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হলেও মানা হয়নি পতাকা উত্তোলনের যথাযথ নিয়ম।

নিয়ম অনুযায়ী, জাতীয় পতাকা ও কালো পতাকা আলাদা দন্ডে উত্তোলন করতে হবে। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার পরেও কালো পতাকা জাতীয় পতাকার নিচে থাকবে। জাতীয় শোক দিবসে যে দন্ডে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে তার উপরিভাগ থেকে পতাকার প্রস্থের সমান নিচে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে হবে। এসব কোনো নিয়মই মানা হয়নি উপজেলার গালা, চালা, গোপীনাথপুর, বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

১৫ আগস্ট (সোমবার) সকাল থেকে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জাতীয় শোক দিবসে উপজেলার চালা ও গালা ইউনিয়ন পরিষদে একই দন্ডে কালো পতাকা ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। দন্ডের উপরে কালো পতাকা এবং তার ৩-৪ হাত নিচে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। যা জাতীয় পতাকা উত্তোলনের নিয়মের লঙ্ঘন।

অপরদিকে গোপীনাথপুর ও বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদে আলাদা দন্ডে জাতীয় পতাকা ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হলেও মানা হয়নি জাতীয় পতাকা উত্তোলনের নিয়ম। কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে জাতীয় পতাকার উপরে।

এ ব্যাপারে গোপীনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মোল্লা (লাভলু) ভুল স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখব।

গালা ইউপি চেয়ারম্যান মো. শফিক বিশ্বাস বলেন, আমার পারিবারিক কাজ থাকায় সকালে আমি পরিষদে আসতে পারিনি। তবে আজ এখানে কাঙ্গালী ভোজের আয়োজন করবে বলে গতকাল রাত থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহেবকে পরিষদের রুমের চাবি দিয়েছি। এছাড়াও দুজন চৌকিদারকেও এখানে দায়িত্ব দিয়ে রেখেছি। চৌকদাররা ভুল বশত একই দণ্ডে পতাকা উত্তোলন করেছে। আমি বিষয়টি জানার পর দ্রুত সংশোধন করেছি।

একই দন্ডে পতাকা উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন চালা ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আব্দুল মজিদ। তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। রাগান্বিত কণ্ঠে বলে ওঠেন, এ নিয়ে আমি, কোনো কথা বলতে চাই না।

বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ফরিদুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি জানিনা, চৌকিদারেরা পতাকা উত্তোলন করেছেন। এ বিষয়ে জেনে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একই দন্ডে পতাকা উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে মানিকগঞ্জ সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী মুঠোফোনে জানান, জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সরকারি নিয়মনীতি অবশ্যই অনুসরণ করা দরকার। আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।

হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম এর কাছে একই দন্ডে পতাকা উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে একই দণ্ডে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তবে জাতীয় পতাকা যেন যথাযথ ব্যবহার করা হয় এ নিয়ে আগামীতে আরও দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


জনপ্রিয় খবর