রুমায় পার্বত্য জেলা পরিষদের জিএফএস পাইপ লাইন প্রকল্পের অর্থের হরিলুট

বান্দরবান প্রতিনিধি | ২৬ জুলাই ২০২২, ০৫:৫৬

সংগৃহীত

রুমা উপজেলায় জিএফএস পাইপ লাইনের পানি সরবরাহের প্রকল্পের কোন কাজ না করে অর্থের হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পের স্কিমের নাম থাকলেও ঠিকাদারের দুর্নীতির কারণের বাস্তবায়নের চিহ্ন নেই বলে অভিযোগ ঐ এলাকার বাসিন্দাদের।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গ্রীস্ম মৌসুমে তীব্র পানি সংকটে ফলে সমস্যা নিরসনে জন্য জেলা পরিষদের সদস্য সিংয়ং ম্রো বরাবরের আবেদন করেছিলেন। আবেদন পরে ঐ এলাকার পানি নিরাসনের জন্য বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ থেকে জিএফএস পাইপ পানি সরবরাহের প্রকল্পের বরাদ্ধ দেওয়া হয়। অথচ ঐ এলাকায় পানি পাইন লাইনের কাজ দুরের কথা কাজের কোন চিহ্ন নেই বলে জানিয়েছে এলাকার বাসিন্দারা। শুধু তাই নয় বর্তমান পর্যায়ের এখন পানি সমস্যা সম্মুক্ষীন দেখা দিয়েছে ঐসব এলাকায়। 

বান্দরবান জেলা পরিষদ তথ্যনুযায়ী, গেল ২০২০-২১ অর্থ বছরের বান্দরবান জেলা পরিষদ থেকে রুমা উপজেলায় বিভিন্ন গ্রামের জিএফএস পাইপ লাইনের পানি সরবরাহের প্রকল্পের / স্কিমের ৪৫ লক্ষ টাকার ব্যায়ের বরাদ্ধ দেওয়া হয়। সে প্রকল্পের স্কিমের কাজ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পেলেও বিন্দুও মাত্র করেননি কোন কাজ। এই প্রকল্পের বরাদ্ধের কাজ কোন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পেয়েছে সে ব্যাপারে মুখ খুলতে অপরাগত প্রকাশ করেছেন জেলা পরিষদের সদস্য জুয়েল বম।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় , রুমা উপজেলার সদর ইউনিয়নের অন্তগর্ত ৭নং ওয়ার্ডের লুংঠাংসি পাড়ায় ২টি গাজী ট্যাংঙ্ক এবং ৩ হাজার পাইপ দিয়ে কাজ শেষ করে নিয়েছেন ঐ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। শুধু তাই নয় রুমা শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দুরে ইয়াংরে ম্রো পাড়ার। সেখানেও ২০ লক্ষ টাকা পরিমাণে প্রকল্প স্কিম নাম থাকলেও বাস্তবায়নের ২০ টাকা ও চিহ্ন দেখা যায়নি।

এছাড়াও থাইক্ষ্যাং বম পাড়া,হ্লাচিং মার্মা পাড়ায, হাকুরাম ত্রিপুরা পাড়াইয় একই চিত্র। ঐ তিনটি গ্রামের ও জিএফএস পাইপ এর মাধ্যমে পানি সরবরাহ প্রকল্প স্কিম থাকলে ও কাজেই কর্মে কিছু না করে আগের মতো রেখে যায়। নাম মাত্র ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান অথচ উন্নয়নের কোন ছোঁয়া পড়েনি ঐ সব দুর্গম এলাকার গ্রামগুলোতে। সেসব এলাকার পানি সংকট নিরাসন হওয়ার দূরের কথা উল্টো পানি অভাব দেখা দিয়েছে সেসব গ্রামে। এ যেন বলা যায় অর্থের প্রলোভনে পড়ে পাহাড়ের বসবাসরত জনগোষ্ঠিকে মৃত্যু পথে ঠেলে দিয়েছেন দুর্নীতিবাজরা। তাদের এই দুর্নীতি চিত্র যেন আয়না ফলকের মতন ভেসে উঠে আসছে ঐ এলাকার উন্নয়নের কর্মকান্ড দেখে। 

ইয়াংরে ম্রো পাড়ার বাসিন্দা পারিং ম্রো বলেন, গ্রীস্ম মৌসুমে তীব্র পানি সংকটে ফলে সমস্যা নিরসনে জন্য জেলা পরিষদের সদস্য সিংয়ং ম্রো কাছে আবেদন করেছি। কিন্তু পানি নিরাসন হওয়ার দুরের কথা কাজ পর্যন্ত করেননি ঠিকাদাররা। এখন আমরা পানি জন্য হাহাকার।

একই এলাকার বাসিন্দা লেরিং ম্রো বলেন, প্রকল্প কাজ পেয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু গ্রামের ভিতর এক বিন্দু মাত্রও কাজ হয় নাই।

থাইক্ষ্যং পাড়া বাসিন্দা জিংথাং বম বলেন, শুধু প্রকল্প নাম শুনেছি কিন্তু বাস্তবায়নের দেখা যায়নি। গ্রামের ভিতর তাদের ইচ্ছায় পাইপ লাইন বসিয়েছে কিন্তু ট্যাঙ্ক দেওয়া দুরের কথা দেখাও যায়নি।

এ ব্যাপারে প্রকল্পের দ্বায়িত্বরত মিস্ত্রি মো. ইদ্রিস বলেন, থাইক্ষ্যং বম পাড়াতে শুধু পাইপ লাইনের কাজ করা হয়েছে। নতুন করে কোনো ট্যাঙ্ক দেওয়া হয়নি। তবে এই প্রকল্পের কাজগুলো হুমায়ুন ঠিকাদার পেয়েছে বলে জানান তিনি।

বান্দরবান জেলা পরিষদের নক্সাকার থোয়াইচমং মার্মা কাছে বলেন, এইটা তো গত বছরের শেষ হয়ে গেছে। আর এ ব্যাপারে রুমা উপজেলার দ্বায়িত্ব জুয়েল বম সাথে যোগাযোগ করেন।

বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য জুয়েল বম বলেন, জিএফএস পানি লাইন ইয়াংরে ম্রো পাড়ার পরিবর্তে লুংঠাওসি বম পাড়া মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এছাড়াও এটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাজ কোন সংস্থা নাহ।

ঠিকাদার ব্যাপারের প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ঠিকাদার নাম বলা যাবে নাহ বলে জানিয়েছেন তিনি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


জনপ্রিয় খবর