তিন পদের দুই পদেই আপন ভাই-বোন

ফরিদপুরে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগে স্কুলের কর্মচারী নিয়োগ বাতিল

এহসান রানা, ফরিদপুর প্রতিনিধি | ১৪ এপ্রিল ২০২২, ০৪:১৯

ছবিঃ সংগৃহীত

ঘুষ-দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এক উচ্চ বিদ্যালয়ের কর্মচারী পদে তিনজনের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। উপজেলার সাতৈর উচ্চ বিদ্যালয়ে এরকম চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।

মঙ্গলবার ( ১২ ই এপ্রিল ) বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের এক সভায় এ নিয়োগ বাতিল করা হয় বলে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সৈয়দ সাহিদুর রহমান সজল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া পদে গত ১ এপ্রিল নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ফরিদপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই পরীক্ষায় ডিজির প্রতিনিধি ছিলেন সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দ্র শেখর দাস, বোয়ালমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহিম, বিদ্যালয়ের সভাপতি সৈয়দ সাহিদুর রহমান সজল ও প্রধান শিক্ষক ইয়াকুব আলী চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। পরীক্ষায় অফিস সহায়ক পদে ৫জন, নিরাপত্তা কর্মী পদে ৪জন এবং আয়া পদে ৩জন অংশগ্রহণ করেন। পরীক্ষার ফলাফলে ঘোষণায় দেখা যায়, আপন ভাই-বোন জাহিদ বিশ্বাস নিরাপত্তা কর্মী এবং মিতু বিশ্বাস আয়া পদে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন। আপন দুই ভাই-বোন হলেন উপজেলার ময়না ইউনিয়নের ময়না গ্রামের বাচ্চু বিশ্বাসের ছেলে ও মেয়ে। অফিস সহায়ক পদে একই ইউনিয়নের বান্দুগ্রামের নবাব নামে এক ব্যক্তি নিয়োগ পান। সভাপতিকে পাশ কাটিয়ে অন্যদের ম্যানেজ করে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার অভিযোগ উঠায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সাতৈর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সৈয়দ সাহিদুর রহমান সজল বলেন, আমাকে পাশ কাটিয়ে প্রধান শিক্ষক ডিজির প্রতিনিধি ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে ম্যানেজ করে অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। পরে আমাকে স্বাক্ষর করতে বললে আমি স্বাক্ষর না করে ম্যানেজিং কমিটির সভা ডাকতে বলি। সভাপতির ঘরে আমাকে স্বাক্ষর করার জন্য অনুরোধ এবং বিভিন্ন লোক দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে প্রধান শিক্ষক। মঙ্গলবার সকালে অনুষ্ঠিত ম্যানেজিং কমিটির সভায় নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। দুই পদে যেহেতু আপন ভাই-বোন এবং অফিস সহায়ক পদে যে নিয়োগ পেয়েছে সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। নিয়োগে স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে এ নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে।

নিয়োগে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে সাতৈর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ময়না ইউনিয়নের হাটখোলারচর গ্রামের ইয়াকুব আলী চৌধুরী বলেন, কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যারা প্রথম হয়েছে তাদের নির্বাচিত করা হয়েছে। ডিজির প্রতিনিধি ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দিয়ে স্বাক্ষর করানো হয়েছে। তবে সভাপতি স্বাক্ষর না করলে তো নিয়োগ সম্পন্ন হবে না। তবে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহিম নিয়োগের বিষয় নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াকুব আলী চৌধুরীর সাথে কথা বলতে বলেন।

সাতৈর উচ্চ বিদ্যালয়ের কর্মচারী নিয়োগের ডিজির প্রতিনিধি ফরিদপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দ্র শেখর দাস বলেন, নিয়োগ বোর্ডে আমি, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষক মিলে প্রশ্ন করেছি। পরীক্ষায় যারা প্রথম হয়েছে আমরা তাদের নিয়োগের সুপারিশ করেছি। তবে ফলাফল প্রকাশের পরই সভাপতি দ্বিমত পোষন করছিলেন। আমি তাঁদের বলেছি স্কুল চালাবেন আপনারা, যাদেরকে নিয়োগ দিলে স্কুল ভাল চলে তাদের নিয়োগ দেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


জনপ্রিয় খবর