করোনার দীর্ঘ বন্ধের পর সশরীরে শিক্ষা-কার্যক্রম চালু করেছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)।
ইতিমধ্যে ক্যাম্পাসে ফিরেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির অধিকাংশ শিক্ষার্থী। ফের প্রাণোচ্ছল হয়ে উঠেছে হাবিপ্রবি ক্যাম্পাস। করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ছয় মাসের সেমিস্টার চার মাসে এবং প্রতি ক্রেডিটের জন্য ৫০ মিনিটের ক্লাসের পরিধি বাড়িয়ে ৭০ মিনিট করার মতো যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির ৫৮ তম একাডেমিক কাউন্সিলে।
৫৮ তম একাডেমিক কাউন্সিলের আলোচনা সভা শেষে সিদ্ধান্ত হয়, অনলাইন ও অফলাইন উভয় মাধ্যমেই শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা চলমান থাকবে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২০ ও ২০১৯ সালে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী এবং তাদের সাথে রি-অ্যাড হওয়া শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা চালু থাকবে। তাদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে পরবর্তীতে অফলাইনে পরীক্ষা ও ক্লাস শুরুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানানো হয়।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার প্রায় ১ মাস অতিবাহিত হলেও সশরীরে ক্লাস ও হলে ওঠার বিষয়ে নতুন কোনো নির্দেশনা পায়নি এই দুই ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে বাঁশেরহাট সংলগ্ন মেসের ভাড়া মাত্রাতিরিক্ত বেশি এবং পর্যাপ্ত ইন্টারনেট সুযোগ সুবিধা না পাওয়ায় সশরীরে শিক্ষা-কার্যক্রমে অংশগ্রহণ এবং হলে উঠতে চায় উক্ত শিক্ষার্থীরা । এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেইসবুকে মন্তব্য করেছেন এ সকল শিক্ষার্থীরা ।
এবিষয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী তাইয়েবা ইসলাম মীম বলেন, " করোনার কারণে সবকিছু যখন খোলা তখন স্কুল-কলেজসহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছিলো বন্ধ৷ সবশেষে এক এক করে হাবিপ্রবি সহ সব বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিলেও হাবিপ্রবির ১৯ এবং ২০ ব্যাচ ফিরতে পারছে না ক্যাম্পাসে। অনলাইন ক্লাসে আর মন বসে না। তাছাড়া অনলাইনের ক্লাস কখনো সশরীরে ক্লাসের বিকল্প হতে পারে না "।
ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, "ক্যাম্পাসে সশরীরে ক্লাস শুরু না হলেও টিউশন,পড়াশোনাসহ নানা কারণে অনেকেই অতিরিক্ত খরচ বহন করে ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে । করোনার সার্বিক পরিস্থিতি এবং অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন গ্রহণ বিবেচনায় দুইটি ব্যাচকে সশরীরে ক্লাস- পরীক্ষা থেকে দূরে রাখা উচিত নয় বলে মনে করি। আমরা দ্রুতই হলে ফিরে সশরীরে ক্লাস- পরীক্ষায় অংশ নিতে চাই। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি "।
কবে নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়টির ১৯ ও ২০ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সশরীরে শিক্ষা-কার্যক্রমে অংশগ্রহণ এবং হলে অবস্থান করতে পারবেন এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. শ্রীপতি সিকদার বলেন, "এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরবর্তী একাডেমিক কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত নেবে "।
তবে কবে একাডেমিক কাউন্সিল হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "আশাকরি খুব শীঘ্রই একাডেমিক কাউন্সিল হতে পারে "।
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আবাসিক মেস গুলোর কন্টাক সিস্টেমের বেড়াকলে বন্দি হাবিপ্রবি পড়ুয়া হাজারো শিক্ষার্থী। একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও মেস মালিক সমিতি সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সভা করেও শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে মুক্তি দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, এর আগে হাবিপ্রবির ৫৮ তম একাডেমিক কাউন্সিলে ১৮ অক্টোবর থেকে পর্যায়ক্রমে হল খোলা এবং ২১ অক্টোবর থেকে সশরীরে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: