জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ‘র্যাগ ডে’ উদযাপনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে এ প্রসঙ্গে একটি পরিপত্র জারি করে নিষেধাজ্ঞা জানানো হয়েছে।
রেজিস্ট্রার জানান, হাইকোর্টের একটি রায়ের আলোকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগ ডে উদযাপন বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, উচ্চ আদালতের হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন নং-৪৫১৫/২০২২ এর একটি আদেশে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘র্যাগ ডে’ উদযাপনের নামে সব ধরনের অশ্লীলতা, নগ্নতা, ডিজে পার্টি, অশোভন আচরণ, নিষ্ঠুর ও নিষিদ্ধ কর্মকাণ্ড এবং বুলিং অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এসব কার্যক্রম থেকে সংশ্লিষ্ট সকলকে বিরত থাকার জন্য বলা হয়েছে।
সাধারণত কোনো ব্যাচের শিক্ষা সমাপ্ত হওয়ার পর র্যাগ ডে পালন করা হয়। সাধারণত এটি অনার্স অথবা মাস্টার্স শেষে হয়ে থাকে। এটিকে অনেকে শিক্ষা সমাপনী উৎসবও বলা হয়ে থাকে।
এর আগে গত ৩০ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগ ডের নীতিমালা অনুমোদন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, র্যাগ ডের নতুন নাম হবে ‘শিক্ষা সমাপনী উৎসব’। এই উৎসব উদযাপনে শিক্ষার্থীদের মানতে হবে একগুচ্ছ নিয়ম।
গত ১৭ এপ্রিল ‘র্যাগ ডে’ পালনের নামে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজে পার্টিসহ নগ্ন, অশ্লীল, উন্মত্ত, কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর কর্মকাণ্ড বন্ধে ৩০ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
সম্প্রীতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগ ডে উদযাপন নিয়ে সারাদেশে সমালোচনা হয়। এছাড়া বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েও র্যাগ ডে উদযাপন দিন দিন অশ্লীলতায় রূপ নিচ্ছে। র্যাগ ডে উদযাপন করার মূল উদ্দেশ্য হলো ছাত্রজীবনের শেষ দিনকে স্মরণীয় করে রাখার অনুষ্ঠান। সেটা দিন দিন অশ্লীলতার দিকে ধাবিত হওয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও উচ্চ আদালত এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছে অনেকেই। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিবুল ইসলাম এক শিক্ষার্থী জানান, কর্তৃপক্ষের এমন নির্দেশনার আগেই শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিকটুর ভাবে র্যাগ ডে উদযাপন বন্ধ করা উচিত ছিল।
এছাড়াও ফেসবুকে অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে সময়োপযোগী বলে বাহবা দিচ্ছেন। আবার অনেকেই র্যাগ ডে উদযাপন বন্ধ হওয়ায় বিরূপ মনোভাব পোষণ করেছেন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান বলেন, সবাই তো অশ্লীলতা করে না, গুটি কয়েকজনের কর্মকাণ্ডের জন্য আমরা সকলে একটি স্মরণীয় মুহূর্তের অনুষ্ঠান উদযাপন থেকে বঞ্চিত হলাম।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: