লাউ চাষে হাফিজের অভাবনীয় সাফল্য

গোলাম সারোয়ার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি | ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ১২:৫২

লাউ চাষে হাফিজের অভাবনীয় সাফল্য

লাউ চাষ করে সফল হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের বড় কুড়িপাইকা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হাফিজ ভূঁইয়া।

বাড়ি সংলগ্ন ১৫ শতাংশ জমিতে দেশীয় পদ্ধতিতে ‘লাল তীর জায়না’ জাতের লাউ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে লাউ চাষ করে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন এই কৃষক।

এই সফলতা দেখে স্থানীয়দের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন এসে দেখছেন এবং লাউ চাষ করতে তার কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। গত ১৫ দিন ধরে স্থানীয় বাজারে লাউ বিক্রি করছেন তিনি। প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। বিক্রিতে ভালো দাম পাওয়ায় তিনি বেশ খুশি।

কৃষক হাফিজ ভূঁইয়া বলেন, কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় দেশীয় পদ্ধতিতে গত প্রায় ২ মাস আগে ৫ শতাংশ জমিতে লাউ আবাদ করি। লাউ আবাদে জমি তৈরি, বীজ ক্রয়, চারা রোপণ, জমি বেড়া দেওয়া আগাছা পরিষ্কার ও শ্রমিকসহ প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। সঠিকভাবে পরিচর্যা করায় চারা রোপণের প্রায় ৪৮ দিনের মাথায় গাছে ফুল আসতে শুরু। এরপর প্রায় ১০-১২ দিনের মধ্যে ঐসব লাউ পরিপক্ক বা খাওয়ার উপযুক্ত হয়।

তিনি আরো বলেন, এ পযর্ন্ত আমি ১০ হাজার টাকার উপর লাউ বিক্রি করেছি। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে এই জায়গা থেকে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে ৭০ হাজার টাকার উপর লাউ বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন।

হাফিজ ভূঁইয়া জানান, ছোটবেলা থেকেই কৃষির প্রতি তার যথেষ্ট শখ রয়েছে। সেই শখ থেকেই মৌসুম অনুযায়ী ধানসহ নানা জাতের সবজি চাষ করেন। ঐসব আবাদে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর উৎপাদনে বৃদ্ধিতে তাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছে।
কম খরচে বেশি লাভ হওয়া ও পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা মিটাতে অন্যান্য সবজির পাশাপাশি গত ৫ বছর ধরে লাউ চাষ করছেন হাফিজ। বর্তমানে তিনি নিজেই ঐসবের পরিচর্যা করছেন। পাশাপাশি একজন শ্রমিক তার এখানে কাজ করছেন।


সরেজমিন দেখা যায়, মাচায় থাকা সবুজ লাউয়ের প্রতিটি ডগায় সাদা ফুলের সম্ভার। মাচার নিচে ঝুলছে শত শত লাউ। পোকা ও কীটপতঙ্গের আক্রমণ থেকে লাউক্ষেতের সুরক্ষায় চারপাশে দেওয়া হয়েছে কাপড়ের বেড়া। চলছে পরিচর্যা। দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসছেন দেখতে। তার দেখাদেখি অনেকেই উদ্বুদ্ধ হয়ে লাউ চাষ করছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় মালচিং পদ্ধতিতে লাউ চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। এ পদ্ধতিতে লাউ উৎপাদনে সাধারণত অন্যান্য ফসলের তুলনায় পরিশ্রম কমও ফলন ভালো হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, মানুষ চেষ্টা করলে অবশ্যই সফলতা পান। যার বাস্তব উদাহরণ কৃষক হাফিজ ভূঁইয়া। ভাগ্য বদলের নিরন্তর চেষ্টায় চাষাবাদে সফল হওয়ায় সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। উপজেলা কৃষি অফিস সার্বক্ষণিক কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং প্রয়োজন মতো সবধরনের সহযোগিতা করে আসছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


জনপ্রিয় খবর