ইবির সাংবাদিকতা বিভাগে তথ্য অধিকার আইন কর্মশালা

ইবি প্রতিনিধি | ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:৫২

ইবির সাংবাদিকতা বিভাগে তথ্য অধিকার আইন কর্মশালা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্ম-পরিকল্পনা ২০২৩-২৪ এর অংশ হিসেবে "তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়ন ও গণমাধ্যমের ভূমিকা" শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন ভবনের চতুর্থ তলায় ৩৪৮ নম্বর রুমে এটি সম্পন্ন হয়। কর্মশালাটি সঞ্চালনায় ছিলেন কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের ২০-২১ শিক্ষার্থী এঞ্জেল।
 
এসময় বিশ্ববিদ্যালয় কোষাধ্যক্ষ এবং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: আলমগীর হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: মাহবুবুর রহমান। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল করিম খান এবং আলোচক হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ।
 
কর্মশালায় তথ্য অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, আমি আজকের এই তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক। আমাদের কাজ হলো কীভাবে শিক্ষার্থীদের তথ্য দিয়ে সমৃদ্ধি করা যায়, কীভাবে আমাদের শিক্ষার্থীদের সচেতন করা যায় এবং কোথায় গেলে কোন তথ্য সঠিকভাবে পেতে পারে তা নিয়ে সচেতন করে তোলা। আগামীর যে আধুনিক স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হতে যাচ্ছে তার সাথে যেনো তাল মিলিয়ে যেতে পারে সেভাবে গ্র‍্যাজুয়েট তৈরী করাই আমাদের লক্ষ্য। একসময় বলা হতো নলেজ ইজ পাওয়ার কিন্তু বর্তমান সময়ে বলা হয় ইনফরমেশন ইজ পাওয়ার। তাই আমাদের যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হলে ইনফরমেটিভ হতে হবে।
 
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: মাহবুবুর রহমান বলেন, জাতীয় শুদ্ধাচার মানে কি?যদি আমরা জাতীয় শুদ্ধাচার সম্পর্কে বুঝি তবেই আমরা তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নে গনমাধ্যমের ভূমিকা সম্পর্কে জেনে নিজেকে তৈরি করতে পারবো। আমরা কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগ থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করে বের হয়ে যাই তাহলে আমাদের প্রফেশন কিন্তু এমনই হওয়া উচিৎ। তাহলে আমি আমাকে শুদ্ধাচারের প্রতি নিয়ে যেতে পারলাম কি না? ইথিকালি আমি ঠিকভাবে সে জায়গায় যেতে পারলাম কি না? আমি এখান থেকে একটা সার্টিফিকেট নিয়ে সমাজে যে একটা বিচরণ করবো, আমি যে সমাজ গঠনের প্রয়াস রাখবো সেখানে কি আমি সফল হবো? আমি যদি আমার চরিত্রটাকে ঠিকভাবে গঠন করে না নিয়ে যেতে পারি তাহলে তো আমার দ্বারা এ সমাজ সঠিক মাত্রায় পরিশুদ্ধ করতে পারবো না।
 
তিনি আরো বলেন,ভমূখ্য আলোচকের কাছে একটি প্রশ্ন,আমি মাঝেমাঝেই দেখি প্রিন্ট মিডিয়া,ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় একটি রিপোর্ট প্রকাশ করছে যার কোনো ভ্যালু নাই,ভিত্তি নাই,একটি গল্পকে ছেড়ে দিলেন,এতে সমাজ বিভ্রান্ত হলো।এটাই কি ইথিকস?এটা তো ইথিকস নয়।ইথিকস হচ্ছে নিজেকে পরিশুদ্ধ করা।
 
এসময় মূখ্য আলোচকের বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আব্দুল করিম খান তথ্য,সাংবাদিকিতার উৎপত্তি ও বিকাশ,সাংবাদিকতার আইন,তথ্য অধিকার আইন,শুদ্ধাচার কি?নিজের তথ্য সম্পর্কে সচেতনতা সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন।
 
কর্মশালায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, কখনো কখনো তথ্য নিজ থেকে তৈরি করা হয় বিকৃতির জন্য, কিন্তু এই বিকৃতির তথ্যের মাধ্যমে কার যে পক্ষে যায় আর কার যে সর্বনাশ হয় তা বলা মুশকিল। এই তথ্য নিয়ে অনেক কথা আছে, তথ্য জানতে চায় তথ্য শিখতে চায়, তথ্য খেতে চায়। এটা হচ্ছে কমিউনিটির নিয়ম, এতো চাওয়া চাইর কি আছে? ব্যাপার টা অনেকটা আমি আম খেতে চাই এরকম। তথ্য কি কমোডিটি? তথ্য অধিকার আইন দরকার আর এই আইন তৈরি করতে অবশ্যই গনমাধ্যমের প্রভাব রয়েছে। আইন তৈরি করতেও যেমন গণমাধ্যম ভূমিকা রাখছে এবং আইন তৈরি হওয়ার পরও পাসপেক্টটিভ অনুযায়ী বাস্তবায়ন করতেও গণমাধ্যম বিশেষ ভূমিকা আছে। তথ্য জানা এবং জানানো এই দুইটিকে মিলিয়ে যে আইন তাই-ই তথ্য অধিকার আইন। এই বিষয় নিয়ে আমরা বহু সেমিনার করেছি, প্রায় ৩৬ টা অবজারভেশনে আমার আছে ছিলো। তথ্যের কাজ হলো নিজে জানা এবং অপরকে জানানো, আজ পৃথিবীতে যতো কাড়াকাড়ি, হানাহানি সবই এই তথ্যকে নিয়ে। যার কাছে যতো তথ্য আছে সে তত ক্ষমতাশালী। এই জিনিসটা পর্যবেক্ষনের ফলে ২০০৯ সাথে তথ্য অধিকার আইন পাশ হয়। এই আইনের মাধ্যমে তথ্য লুকিয়ে রাখার যে বিষয়টা তা ধীরে ধীরে কমে আসছে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: