আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের নিরক্ষর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে সাক্ষরতা ও জীবনমুখী দক্ষতা বৃদ্ধিতে বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, এর ফলে সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৭৫.৬ শতাংশ হয়েছে; যা ২০১০ সালে ৫৬.৮ শতাংশ ছিল। মুজিববর্ষে ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী ২১ লক্ষ নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে সাক্ষরতা প্রদানের কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন আছে। বিদ্যালয় হতে ঝরে পড়া শিক্ষার্থী ও যারা কখনও স্কুলে পড়াশোনা করেনি এমন ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সী ১০ লক্ষ শিশুর শিক্ষা প্রদান কার্যক্রম চলমান আছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কেন্দ্রসমূহ বন্ধ থাকায় ‘সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন’ ও ‘বাংলাদেশ বেতার’-এর মাধ্যমে পাঠদান সম্প্রচার করে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় সম্পৃক্ত রাখা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে আরও বলেন, জীবন-জীবিকা নির্বাহের জন্য শিক্ষা ও দক্ষতা অর্জন জরুরি। বিশেষভাবে, নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে উৎপাদনশীল কাজে সম্পৃক্ত করে ২০৪১ সালের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে চলতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উদযাপিত হয়। স্বাধীনতার পর পরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সরকার কর্তৃক প্রণীত ১ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (১৯৭৩-১৯৭৮)-তে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে গণমানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণে তাদের ভূমিকা সম্বন্ধে সচেতন করার লক্ষ্যে কার্যকরী সাক্ষরতা কর্মসূচি গ্রহণের সুপারিশ করা হয় এবং তা বাস্তবায়নের জন্য বয়স্ক ও গণশিক্ষাসহ উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা খাতে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান রাখা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকার উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন ২০১৪ প্রণয়ন করেছে। এ আইনের আওতায় জীবন ও জীবিকায়ন দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন, জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি, উপানুষ্ঠানিক ধারায় বৃত্তিমূলক, উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানমূলক প্রশিক্ষণ এবং তথ্যপ্রযুক্তি সাক্ষরতা প্রদানের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর ওপর দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাতে (২০২১-২০২৫) জীবনব্যাপী শিক্ষার বৈশ্বিক ধারণার দিকে অগ্রসর হওয়ার লক্ষ্যে সকল নিরক্ষরকে মৌলিক সাক্ষরতার জ্ঞান প্রদানের কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। এ কৌশল বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আইসিটি বেইজড জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অভীষ্ট ৪-এ জীবনব্যাপী শিক্ষা কার্যক্রম উৎসাহিত করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী দ্রুততর সময়ের মধ্যে সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় শতভাগ সাক্ষরতা অর্জন ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতামুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে।
সূত্র : বাসস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: