বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, শুরু থেকেই তারা (চীন) আমাদের অনেক সহযোগিতা করে আসছে। মহামারির এই সময় দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে।
গত সপ্তাহে চীন-বাংলাদেশ যৌথ টিকা উৎপাদন চুক্তির সন্ধিক্ষণে বার্তা সংস্থা শিনহুয়াকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।
চীনের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রাদুর্ভাবের প্রথম দিনগুলোতে চীন যখন কঠিন অবস্থায় পড়েছিল, তখন চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ। পরে বাংলাদেশ যখন সমস্যায় পড়ে, তখন চীন সরকার, এমনকি (চীনের) বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও অনেক সহযোগিতা করেছে। আমরা অত্যন্ত ভাগ্যবান যে, চীনের মতো ভালো বন্ধু পেয়েছি।
এদিন করোনাভাইরাসের উৎস অনুসন্ধান প্রসঙ্গেও চীনের রাষ্ট্রীয় বলেন, করোনাভাইরাসের উৎস অনুসন্ধান রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত না হয়ে বস্তুনিষ্ঠ হওয়া উচিত। কোভিড-১৯’র উৎস ও কারণগুলো খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে আমি মনে করি, এটি বিজ্ঞানীদের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তদন্ত হলে তা বিপর্যয় ডেকে আনে।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইরাক যুদ্ধের উদাহরণ টেনে বলেন, প্রথমে এতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। এরপর ছবি ও ভুয়া প্রমাণসহ খবর আসে, ইরাকের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে। এতে গোটা বিশ্ব বিভ্রান্ত হয়ে সেটি সত্য বলে বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়। কিন্তু ঘটনাক্রমে তারা ইরাক দখলের পর দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে যথাসাধ্য চেষ্টা করেও এর তিল পরিমাণ (অস্ত্র) খুঁজে বের করতে পারেনি।
করোনা মোকাবিলায় বিশ্বজুড়ে সমানভাবে টিকা বিতরণের গুরুত্বও উল্লেখ করে আবদুল মোমেন বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক যে, অনেক ধনী দেশ প্রচুর টিকা মজুত করেছে এবং তারা সেগুলো তুলনামূলক দরিদ্র দেশগুলোর সঙ্গে ভাগাভাগি করছে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, টিকা সার্বজনীন হওয়া দরকার। কোনো ধরনের বৈষম্য না করে এটি সব দেশেই বিতরণ হওয়া উচিত। প্রত্যেকটি মানুষ করোনামুক্ত না হলে কেউই এ থেকে রক্ষা পাবে না।
গত ১৬ আগস্ট দেশে করোনার টিকা উৎপাদনের জন্য চীনের সিনোফার্মের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তিতে সই করে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সিনোফার্মের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্মকর্তা লিথাং চুচিং চিং ও ইনসেপ্টার চেয়ারম্যান আবদুল মোক্তাদির চৌধুরী চুক্তিপত্রে সই করেন।
রাজধানীর মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিসিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস) মিলনায়তনে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: