ক্ষমতার লোভে উন্মত্ত হয়ে বিএনপির স্নায়বিক সংবেদনশীলতা লোপ পেয়েছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার (১৩ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে এ দাবি করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা শ্রাবণের শেষ প্রান্তে এসে নতুন করে আষাঢ়ের গল্প শুরু করেছেন। তারা বলছেন, শেখ হাসিনা সরকার নাকি ওয়ান ইলেভেন সরকারের ধারাবাহিকতা। দেশের জনগণ ভালো করেই জানে, ওয়ান ইলেভেন বিএনপির কারণেই সৃষ্টি হয়েছিল। আসলে বিএনপির মাথা থেকে ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টির ভূত এখনও নামেনি। দেশবাসীর কাছে অজানা নয়- কারা বিচারপতি হাসানকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান বানাতে বিচারপতিদের বয়স বাড়িয়েছিল? কারা প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিন সাহেবকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান বানিয়ে প্রহসনের নির্বাচন করতে চেয়েছিল? কারা ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার সৃষ্টি করে এ দেশের জনগণের ভোটাধিকারের সঙ্গে তামাশা করেছিল? মূলত বিএনপির অন্ধ ক্ষমতালিপ্সা আর অবাধ দুর্নীতির সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখার অপচেষ্টা সেদিন ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টির পথকে মসৃণ করেছিল। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোটকে জনগণ অভূতপূর্ব গণরায় প্রদান করে। ফলে ভূমিধস বিজয়ের মাধ্যমে মহাজোট সরকার গঠন করেছিল। তাই বলব, ওয়ান ইলেভেন সরকারের ধারাবাহিকতা নয়, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন সরকার ছিল জনগণের সরকার।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনার শুরু থেকে জনগণের জীবনের পাশাপাশি জীবিকার সুরক্ষা, অর্থনীতির চাকা সচল রাখা, উৎপাদন ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা, খাদ্য নিরাপত্তা, করোনার নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসা নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ, সুরক্ষা সামগ্রী সংগ্রহ ও সম্মুখ যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, অসহায় মানুষের সুরক্ষায় শেখ হাসিনা সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আর বিএনপি শুরু থেকে যে সহজ কাজটি করছে, তা হলো চিরাচরিতভাবে সরকারের অন্ধ সমালোচনা। সরকারের একটি ভালো কাজও এ পর্যন্ত তাদের চোখে পড়েনি। এক্ষেত্রে যেন তাদের চোখে ছানি পড়েছে। হাজার হাজার সম্মুখ সারির যোদ্ধা জীবনবাজি রেখে কাজ করছে, এমনকি মানবিকতার অনন্য নজির স্থাপন করতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করছে। অথচ বিএনপি তাদের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি, ক্ষমতার লোভে উন্মত্ত হয়ে তাদের স্নায়বিক সংবেদনশীলতা লোপ পেয়েছে। সমালোচনার নামে ঢালাও মিথ্যাচারের প্রতিযোগিতায় নেমেছে বিএনপি। তারা ভেবেছিল ভ্যাকসিন সংগ্রহে সরকার ব্যর্থ হবে। তারা তাদের সীমাবদ্ধ জ্ঞান দিয়ে শেখ হাসিনার সরকারকে মূল্যায়ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার অনন্য কূটনৈতিক দক্ষতা এবং মানবিক নেতৃত্বে সরকার ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করেছে। টিকা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর বিএনপির অপকৌশল আবারও ব্যর্থ হওয়ায় তারা গৃহকোণ থেকে নৈরাজ্য সৃষ্টির লক্ষ্যে কাল্পনিক অভিযোগ তুলছে। নির্লজ্জভাবে মিথ্যা অভিযোগ তোলা বিএনপির নিত্যনৈমিত্তিক কর্মসূচিতে পরিণত হয়েছে। আর তাদের এই ঢালাও মিথ্যাচার-ষড়যন্ত্রের বিপরীতে শেখ হাসিনার জনকল্যাণমূলক কর্মপরিকল্পনাই প্রতিবাদের মোক্ষম অস্ত্র।
বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, সরকারি নাকি করোনা ব্যবস্থাপনায় পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। সফল না কি ব্যর্থ তা দেশের মানুষ দেখছে, কিন্তু আপনারা কী করছেন লিপ সার্ভিস ছাড়া? দুই এক জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সারাদেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে লাখ লাখ মানুষ টিকা নিচ্ছে, অথচ বিএনপি নেতারা তা দেখছেন না। তারা চেয়েছিল লাখ লাখ মানুষ না খেয়ে, চিকিৎসা না পেয়ে রাস্তায় মরে পড়ে থাকবে, দেশে একটা অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হবে, তারপর তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: