ঢাকায় সফররত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছেন, গ্রীষ্মকাল শেষে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে সারা বিশ্বে করোনা টিকা সরবরাহে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশকেও করোনা ভ্যাকসিন দিতে আগ্রহী তার দেশ।
শুক্রবার বিকেলে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন জন কেরি। এসময় তিনি জানান, নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রথম একশ দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে এখন পর্যন্ত ৯৯ মিলিয়ন আমেরিকান নাগরিক প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৫৬ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ।
জন কেরি আরও জানান, আগামী ২২ ও ২৩ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রে ৪০টি দেশের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানের অংশগ্রহণে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হবে ‘গ্লোবাল লিডারস সামিট অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে জো বাইডেনের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন তিনি। আমন্ত্রণপত্র পেয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। সাবেক এ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে প্রধানমন্ত্রী তুলে দেন মুজিব জন্মশতবর্ষের শুভেচ্ছা স্বারক। উপহার দেন বঙ্গবন্ধু রচিত ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ এবং ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেনস ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্যা নেশন’ বই।
বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের জলবায়ু বিষয়ক দূত জানান, নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য প্রযুক্তি হস্তান্তর, কার্বন নিঃসরণ ও অভিযোজনসহ জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া, দেশটির বকেয়া ২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করবে বাইডেন প্রশাসন। জন কেরি জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকার প্রশংসা করেন।
জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। বর্তমানে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের চেয়ারম্যানও বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জন কেরিকে বলেন, ‘প্যারিস চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাবর্তন জলবায়ু পরিবর্তন কূটনীতিতে নতুন গতি সঞ্চার করবে।’ ভারত, ভুটান এবং নেপালের সঙ্গে আঞ্চলিক ভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক বা ত্রিপক্ষীয় উপায়ে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে আলোচনা চলছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
এই বৈঠক শেষে ঢাকা ছাড়েন জন কেরি। এর আগে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় একদিনের সংক্ষিপ্ত সফরে ঢাকায় আসেন তিনি। জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পরে, দেশটির কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বাংলাদেশে এটাই প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর। এর আগে, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন বাংলাদেশ সফর করেছিলেন জন কেরি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: