বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ব্রিটিশ সাংবাদিক সায়মন ড্রিং (৭৬) আর নেই। শুক্রবার (১৬ জুলাই) রুমানিয়ার একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সময় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
মঙ্গলবার (২০ জুলাই) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইস্টার্ন লিংকের এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন নানা দেশের অজস্র মানুষ। যুদ্ধের মাঠে, রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে, শরণার্থী শিবিরে, প্রতিবাদে বা জনমত গঠনে কঠিন সেই সময়ে তাঁরা ভূমিকা রেখেছেন। সেই বন্ধুদের মধ্যে ব্রিটিশ সাংবাদিক সায়মন ড্রিং ছিলেন অন্যতম।
সাইমন ড্রিং ইংল্যান্ডের নরফোকের ফাকেনহাম নামক এক ছোট্ট শহরে ১৯৪৫ সালের ১১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে তাকে বোর্ডিং স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এরপর তিনি কিংস্ লিন টেকনিক্যাল কলেজে অধ্যায়ন করেন। ১৬ বৎসর বয়সে তিনি গৃহত্যাগ করেন। ১৯৬২ সালে বহিঃবিশ্ব ভ্রমণের অংশ হিসেবে ভারত ভ্রমণ করেন।
সায়মন ড্রিং একমাত্র সাংবাদিক, যিনি ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানের ভয়াবহতা ও নৃশংসতার শুরু থেকেই প্রতিবেদন করছিলেন। বাংলাদেশ থেকে তাকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছিল। ভারতে মার্ক টালি যেমন, সায়মন ড্রিং বাংলাদেশের মানুষের কাছে সেরকমই একজন।
সায়মন ড্রিং বিবিসি, রয়টার্স, টেলিগ্রাফ, ওয়াশিংটন পোস্টের মতো শীর্ষ সংবাদমাধ্যমে কাজ করেছেন। পেয়েছেন বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কার। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্টার অব দ্য ইয়ার-১৯৭১।
২০০০ সালে সায়মন ড্রিং বাংলাদেশে এসেছিলেন এ দেশের প্রথম বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একুশে টিভি গড়ে তোলার প্রধান কারিগর হিসেবে। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর একুশে টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। পরে ২০০২ সালের অক্টোবরে সরকার সায়মন ড্রিংয়ের ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করে তাকে অবিলম্বে বাংলাদেশ ত্যাগের আদেশ দেয়। এরপর তিনি বাংলাদেশ থেকে চলে যান।
১৯৪৫ সালে ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন সায়মন ড্রিং। ১৮ বছর বয়সে ব্যাংকক ওয়ার্ল্ড নিউজপেপার থেকে তিনি কাজ শুরু করেন। নিজ চোখে দেখেছেন ২২টি যুদ্ধ, অভ্যুত্থান ও বিপ্লব।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: