সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে দেশে ফেরার সময় নওগাঁর সাপাহার সীমান্তের হাপানিয়া এলাকা থেকে আট বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপজেলার হাপানিয়া এলাকা দিয়ে দেশে প্রবেশের সময় ১৬ বিজিবির সদস্যরা তাঁদের আটক করে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাঁদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট অধ্যাদেশ আইনে সাপাহার থানায় মামলা করে বিজিবি।
১৬ বিজিবি নওগাঁ ব্যাটালিয়নের হাপানিয়া সীমান্ত চৌকির (বিওপি) কমান্ডার নায়েক সুবেদার আজিজুল ইসলাম বলেন, সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে হাপানিয়া
সীমান্ত চৌকি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে ভারত-বাংলাদেশের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া পুনর্ভবা নদী দিয়ে ওই আট বাংলাদেশি নাগরিক বাংলাদেশে অবৈধভাবে
প্রবেশের চেষ্টা করে। টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে তাঁদের গতিরোধ করে আটক করে। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে সাপাহার থানায় অনুপ্রবেশের দায়ে মামলা দেওয়া হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজন নারী ও তিনজন পুরুষ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার আব্দুর রহমান গাজীর ছেলে জহুর আলী গাজী (৩৭), একই জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার আমিয়ান
গ্রামের জহুর আলীর স্ত্রী সালমা পারভীন (৩০), শ্যামনগর উপজেলার শ্রীফলকাটি গ্রামের শামসুল গাজীর ছেলে আবু হাসান (৩২) ও তাঁর স্ত্রী নুরুননাহার বেগম (২৭), জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার রায়পুর গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে শরিফুল ইসলাম (২৭), নড়াইলের কালিয়া উপজেলার ফুলদা গ্রামের মৃত আলিফ খালাসির মেয়ে সোনিয়া খাতুন (২৫), ময়মনসিংহ সদর উপজেলার নতুন বাজার এলাকার জাহাঙ্গীর আকন্দের মেয়ে সাদিয়া খন্দকার ইভা (২৪) এবং কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নওদাপাড়া গ্রামের আবু হোসেনের মেয়ে পপি আক্তার (২১)।
১৬ বিজিবি নওগাঁ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল রেজাউল কবীর জানান, যশোর ও সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ওই আট বাংলাদেশী দালালদের সহায়তায় অবৈধভাবে ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ করেন। পরে তাঁরা ভারতীয় পুলিশের হাতে আটক হয় এবং বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় তাঁদের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের দায়ে মামলা হয়। মামলায় তাঁদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়। সাজাপ্রাপ্ত ওই আট বাংলাদেশির সবাই ভারতের দমদম সেন্ট্রাল জেলে বন্দী ছিলেন। সাজা শেষে গতকাল সোমবার তাঁদেরকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তি পেয়ে তাঁরা সাপাহার সীমান্তের হাপানিয়া এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টাকালে আটক হন।মামলা দিয়ে সাপাহার থানা পুলিশের কাছে ওই আট অনুপ্রবেশকারীকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম বলেন, বিজিবির হাতে আটক ওই আট ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাসপোর্ট অধ্যাদেশ-১৯৭৩-এর ১১(১) ধারায় বিদেশে অনুপ্রবেশের অভিযোগে হাপানিয়া বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েক সুবাদার আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। করোনা মহামারী সময়ের কারণে সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাঁদেরকে সাপাহার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন শেষ হলে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: