স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মোটরচালিত রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হিয়েছে।
রোববার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য টাস্কফোর্সের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের জানান, পর্যায়ক্রমে আলোচনা করে ইজিবাইক, নসিমন, করিমন ও ভটভটিও বন্ধ করে দেয়া হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির ১১১টি সুপারিশ ছিল। পরে এ বিষয়ে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। বেশ কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নে পথে, অল্প কিছু বাস্তবায়িত হয়েছে। বাকিগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করবো, আমরা সেই বিষয়ে কর্মপন্থা নির্ধারণ করেছি।’
আসাদুজ্জামান খান কামাল সভার সিদ্ধান্ত তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি সারাদেশে রিকশা-ভ্যানের মধ্যে মোটর লাগিয়ে রাস্তায় চলছে। শুধু সামনের চাকায় ব্রেক, পিছনের চাকায় কোনো ব্রেক নেই বা ব্যবস্থা থাকলেও তা অপ্রতুল। সেগুলো যখন ব্রেক করে যাত্রীসহ গাড়ি উল্টে যায়। এই ধরনের দৃশ্য আমরা দেখেছি। আমরা দেখেছি হাইওয়েগুলোতেও এই রিকশা চলে আসছে। এ জন্য সারাদেশে এই ধরনের রিকশা...প্যাডেলচালিত রিকশার বিষয়ে আমরা বলছি না। প্যাডেলচালিত রিকশাকে যারা ইঞ্জিন দিয়ে রূপান্তর করেছেন, সেই সব রিকশা-ভ্যান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
ইজিবাইক, নছিমন, করিমনের জন্য দুর্ঘটনা ঘটছে। এগুলোর বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নছিমন, করিমন, ভটভটি বিভিন্ন শহরে অটোরিকশা চলছে। আমরা সব জায়গায় যানবাহনের ব্যবস্থা করতে পারিনি। গ্রাম-গ্রামান্তরে সুন্দর রাস্তা হয়ে গেছে। হাঁটা কিংবা সাইকেল, মোটরসাইকেল, রিকশা ছাড়া পর্যাপ্ত যানবাহন নেই। সেজন্য নছিমন, করিমন পণ্য পরিবহন কিংবা যানবাহনের বিকল্প হিসেবে কাজ করছে। এটা নিয়েও আলোচনা হবে। খুব শিগগিরই এটাকে পরিমিত করা এবং ফাইনালি বন্ধ করা যায় কি-না সেটা নিয়ে আলোচনা হবে। আমরা সেখানেও কাজ করবো।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘ইজিবাইক যথেষ্ট পরিমাণ এসে গেছে। ছোট ছোট গলিতে এগুলোর চলার কথা ছিল, প্রথমে সেভাবেই আসছিল। কিন্তু এরা সর্বত্র বিচরণ করছে। কমিশনার (ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার) জানিয়েছেন, ১৩ হাজার মোটরচালিত রিকশা-ভ্যান আমরা ধ্বংস করেছি। ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, যাতে তারা তাদের নির্দিষ্ট স্থান থেকে বের হতে না পারে। হাইওয়েতে কিংবা বড় রাস্তায় না আসতে পারে। ক্রমান্বয়ে আমরা এটাও বন্ধ করে দেব।’
সভায় সশরীরে ও ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খান, সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মো: মসিউর রহমান রাঙা, পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, টাস্কফোর্সের অন্যান্য সদস্যরা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: