তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহ্মুদ সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আন্দোলনের নামে গুহা থেকে বের হয়ে অনলাইনে চেহারা দেখিয়ে বিএনপির কর্মসূচির নামে গাড়ি পোড়ানো, আগুন সন্ত্রাস চালানো, মানুষের ওপর বোমা নিক্ষেপের কর্মসূচি ঘোষণা করা হচ্ছে। এগুলো কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি হতে পারে না। এর বিরুদ্ধে দয়া করে আপনারা কলম ধরুন, কথা বলুন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাকরাইলে তথ্য ভবন মিলনায়তনে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বলেন, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশের নামে ৩২ জন সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করেছে। একজন সাংবাদিককে টানা-হেঁচড়া করে মাটিতে ফেলে পেটানো হয়েছে। এর মধ্যে ২০ জনের বেশি হচ্ছে বিএনপি বিটের সাংবাদিক। তাদেরকে তারা চেনে, তারপরও মেরেছে। বাংলাদেশে একদিনে এতো সাংবাদিককে আহত করার ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি।
তিনি বলেন, শুধু তাই নয়, তারা যখন ক্ষমতায় ছিলো তখন খুলনার হুমায়ুন কবীর বালু, মানিক সাহা, যশোরের সাইফুল ইসলাম মুকুল, শামসুর রহমানসহ ৭ বছরে ১৪ জন সাংবাদিককে শুধু খুলনা-যশোর এলাকাতেই হত্যা করেছে। সাংবাদিকদের ওপর বিএনপি-জামায়াতের কেন জানি ক্ষোভ। তারা যখনই ক্ষমতায় ছিলো সাংবাদিকদের হত্যা করেছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি বলেছিল, জোটের সমর্থন নিয়ে তারা দুর্বার আন্দোলনের চেষ্টা করছে, নির্বাচনটাকে ঠেকিয়ে দেবে। অথচ যারা তাদের বাতাস দিয়েছিলো তাদেরও বাতাস ফুরিয়ে গেছে আর গতকালই তাদের ১২ দলীয় জোট থেকে ৩টি নিবন্ধিত দলসহ ৬টি দল বের হয়ে গেছে। জোটের শরিকরাও পালিয়ে যাচ্ছে আর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছে। আমার শংকা, যেভাবে তৃণমূল বিএনপি আগাচ্ছে তাতে বিএনপি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।
বিএনপি অফিস তালাবদ্ধ প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, এই তালা প্রশাসন দেয়নি, ওরাই তালা মেরে চলে গেছে। একটা তালা খোলার মানুষ নাই তাদের। একটা তালা খুলে ওখানে বসার সাহসটাও তারা হারিয়ে ফেলেছে, তারা কীভাবে রাজনীতি করে! আর বিএনপির পুলিশ আমাদের অফিসে তালা দিয়েছিলো, আমি ছিলাম সেখানে, আমরা তালা ভেঙ্গে ঢুকেছি।
যথাসময়ে উৎসাহ, উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, আসুন সবাই মিলে দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাই। এই অগ্নিসন্ত্রাস-নৈরাজ্যের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করি। আমাদের সরকার এই আগুন সন্ত্রাসী, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী দেশবিরোধী অপশক্তিকে নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর।
সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট নিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সাংবাদিকবান্ধব, এই ট্রাস্ট তার অনন্য দৃষ্টান্ত। আজ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট সাংবাদিকদের একটি ভরসার স্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনাকালে এককালীন সহায়তা হিসেবে ১০ হাজারের বেশি সাংবাদিককে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এ জন্য ১০ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছেন।
মন্ত্রী ও অতিথিবৃন্দ এ দিন ১৮৬ জন সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের হাতে ১ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করেন। এর আগে তথ্য ভবন কমপ্লেক্সে পুরাতন ডিএফপি ভবনের দ্বিতীয় তলায় সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের নতুন অফিস উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ বাদলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, গণযোগাযোগ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. নিজামূল কবীর, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়া ও ট্রাস্টের পরিচালক মিয়া মুহম্মদ মনিরুল কবীর উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: