পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের গ্রেফতারের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এই ঘটনায় দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে এবং এই পরিস্থিতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে মোকাবিলা করতে হবে। বৃহস্পতিবার (২০ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পরে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, 'এটি অনভিপ্রেত এবং দুঃখজনক ঘটনা। আমি আশা করবো এই ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে।'
এসময় আন্তর্জাতিকভাবে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সরকারের লুকানোর কিছু নাই জানিয়ে তিনি বলেন, 'যে ঘটনা ঘটেছে সেটি খুব দুঃখজনক। সেটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ম্যানেজ করা উচিত ছিল। গুটি কতক লোকের জন্য এই বদনামটা হচ্ছে এবং আমি জানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হিসেবে আমাদের এটি ফেস করতে হবে।'
এ ঘটনা নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ যথার্থ মন্তব্য করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমার সহকর্মীরা বলেছেন রোজিনা ইসলামের ন্যায়বিচার হবে। তারা বলেছেন এটি দুঃখজনক, অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।'
সংবাদ মাধ্যম দেশের জন্য বিরাট কাজ করছে। তাদের কারণে আমরা বালিশ কাণ্ড শুনেছি, আপনাদের কারণে আমরা লাখ টাকার সুপারি গাছের কথা শুনেছি, আপনাদের কারণে সেই শাহেদ করিমের (রিজেন্ট ডায়াগনোস্টিক সেন্টার) তথ্য পেয়েছি। সরকার প্রতিটা ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিয়েছে। এসব করে আপনারা সরকারকে খুব সাহায্য করছেন, বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'এটি খুবই দুঃখজনক। কারণ শেখ হাসিনার সরকার সংবাদ-বান্ধব সরকার। আমরা কখনই আপনাদের নিষেধ করি না।'
অনেকে প্রশ্ন করবে এবং আমরা এ ধরনের ঘটনা চাই না। যেহেতু এটি বিচারাধীন বিষয় সেইজন্য বিস্তারিত কথা বলতে চাই না, যোগ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, রোজিনা ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সোমবার (১৭ মে) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। পরে জানা যায়, তাকে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা একটি কক্ষে আটকে রেখেছেন। রোজিনা ইসলামকে আটকে রাখার খবর পেয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই ভবনে যান। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে তাকে আটকে রাখার কারণ সম্পর্কে গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কিছুই জানাননি। একপর্যায়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে কিছু নথি সরানোর অভিযোগ এনে পুলিশ ডাকা হয়েছে। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে রোজিনাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে আসা হয় এবং রাতেই তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। পরে মঙ্গলবার (১৮ মে) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসীমের আদালত রোজিনা ইসলামের রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: