করোনায় ভারতে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। সেখানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে শ্বাস নেয়ার জন্য হাঁসফাঁস করতে থাকা দুই করোনা রোগী দিল্লির একটি সরকারি হাসপাতালের একটি বেড শেয়ার করতে বাধ্য হয়েছেন।
ভারতের অন্যতম বড় করোনা হাসপাতাল লোক নায়েক জয় প্রকাশ নারায়ন হাসপাতালের দেড় হাজার শয্যা এখন রোগীতে উপচে পড়ছে। বেড ভাগাভাগি করা ছাড়াও সদ্য মারা যাওয়া রোগীদের মরদেহ স্তুপ করে রাখা হচ্ছে ওয়ার্ডের বাইরে। করোনা পরিস্থিতির এই ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে।
বছরের শুরুতে ভারতে দৈনিক দশ হাজারেরও কম করোনা রোগী শনাক্ত হলেও বৃহস্পতিবার দৈনিক সংক্রমণের পরিমাণ দুই লাখ ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্বের যে কোনও দেশে যে কোনও সময়ের চেয়ে এই পরিমাণ সবেচেয়ে বেশি।
গুরুতর করোনা রোগীদের হাসপাতালটিতে প্রাথমিকভাবে ৫৪টি বেড ছিলো। তবে সেই সংখ্যা বাড়িয়ে এখন তিনশ’ করা হয়েছে। তারপরও সামলানো যাচ্ছে না রোগীর চাপ। রোগীরা বেড শেয়ার করতে বাধ্য হচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার ডা.সুরেশ কুমার বলেন, ‘আজ আমরা ১৫৮ জনকে নতুন ভর্তি নিয়েছে। এর প্রায় সবার অবস্থাই গুরুতর।’
গত বছর তিন মাস বিশ্বের অন্যতম কঠোর লকডাউন আরোপ রাখার পর এই বছরের শুরুতে ভারত সরকার প্রায় সব ধরনের বিধিনিষেধ তুলে নেয়। যদিও দেশটির বহু এলাকায় এখন স্থানীয় বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। দ্রুত সংক্রমণ ঘটানো নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারণে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। সুরেশ কুমার বলেন, মানুষ করোনা নির্দেশনা মানছে না।
হাসপাতালের মর্গের বাইরে স্বজনদের মরদেহের জন্য তপ্ত রোদের মধ্যে অপেক্ষা করছেন অনেকে। ৪০ বছর বয়সী প্রশান্ত মেহরা জানান ৯০ বছর বয়সী দাদীকে লোক নায়েক হাসপাতালে ভর্তির আগে আরেকটি হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা চালিয়েছিলেন। তবে তাতে কোনো লাভ হয়নি। এই হাসপাতালে আনার ছয় থেকে সাত ঘণ্টার মাথায় তার মৃত্যু হয়।
বছরের শুরুতে ভারতে দৈনিক দশ হাজারেরও কম করোনা রোগী শনাক্ত হলেও বৃহস্পতিবার দৈনিক সংক্রমণের পরিমাণ দুই লাখ ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্বের যে কোনও দেশে যে কোনও সময়ের চেয়ে এই পরিমাণ সবেচেয়ে বেশি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: