জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের বিষয়টি যেমন বাংলাদেশসহ বিশ্বকে ভাবিয়ে তুলেছে তেমনি বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনাও উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। প্রতিদিনই দেশের কোনো না কোনো জেলায় বজ্রপাতে মৃত্যু হওয়ার খবর আসছে সংবাদ মাধ্যমে।
ডিজাস্টার ফোরামের এক গবেষণায় দেখা গেছে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত দেশে বজ্রপাতে মোট ২৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শিশু ৫৪ জন, নারী ৩৯ এবং পুরুষ ১৭৯ জন।
বজ্রপাতে এ বছর সবচেয়ে বেশি মারা গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় (৩২ জন)। এছাড়া সিরাজগঞ্জ জেলায় ১৯ জন এবং জামালপুরে ১৬, নেত্রোকোনা ১৫, চট্টগ্রামে ১২ এবং কিশোরগঞ্জ ১০ জন মারা গেছে।
সবশেষ বুধবার (০৪ আগস্ট) চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় বজ্রপাতে ১৭ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ১২ জন পুরুষ, ৫ জন নারী।
দেশের ২০১১ সালের পর থেকে বজ্রপাতে মৃত্যুর প্রবণতা ক্রমাগতভাবেই বেড়ে চলছে। ২০১৫ সালে ৯৯ জন, ২০১৬ সালে ৩৫১, ২০১৭ সালে ২৬২, ২০১৮ সালে ৩৫৯, ২০১৯ সালে ১৬৮ জন। এছাড়া ২০২০ সালে বজ্রপাতে মারা গেছে ৩৮০ জন। এর মধ্যে শিশু ৮০, নারী ২৯, এবং পুরুষ ২৭১ জন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর, বুয়েট, দুর্যোগ ফোরামসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের তথ্য মতে, গত এক দশকে (২০১০ সাল থেকে) দুই হাজারের বেশি মানুষ বজ্রপাতে মারা গেছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন কয়েক হাজার নারী-পুরুষ। এর মধ্যে বেশিরভাগই মাঠে কাজ করতে গিয়ে মারা গেছেন।
ফিনল্যান্ডের বজ্রপাতবিষয়ক গবেষণা সংস্থা ভাইসালার তথ্য মতে, দেশে বজ্রপাতে মৃত্যুর ৭০ শতাংশ ঘটনা ঘটে মাঠে-ঘাটে কৃষিকাজ করার সময়। এ ছাড়া বাড়ি ফেরার পথে সাড়ে ১৪ শতাংশ এবং গোসল করা ও মাছ ধরার সময় ১৩ শতাংশের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
আন্তর্জাতিক গবেষণা মতে, বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে অন্তত ৪০টি বজ্রপাত হয়। বাংলাদেশ পৃথিবীর বজ্রপাতপ্রবণ অঞ্চলের মধ্যে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। তাই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বজ্রপাতে মৃত্যুর হার কমিয়ে আনার কোনো বিকল্প নেই।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: