নবাগত অভিনেত্রী জেবা জান্নাতকে ডিরেক্টরস গিল্ড কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষণার পর নির্মাতা দোদুলের বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাবের অভিযোগ তুলেছেন জেবা। এর আগে এই অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে শুটিংয়ে অসহযোগিতা ও অসাদাচারণের অভিযোগ এনেছেন পরিচালক রাশেদা আক্তার লাজুক। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেবা জান্নাতকে ২০ জুন থেকে নিষিদ্ধ করেছে সংগঠনটি।
এই ঘটনার পর একটি গণমাধ্যমের কাছে জেবা জান্নাত জানান, তিনি উল্টো নির্মাতার অপেশাদারি আচরণের শিকার হয়েছেন। এমনকী তাকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগও করেন জেবা জান্নাত। তিনি জানান, রাশেদা আক্তার লাজুকের স্বামী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন দোদুল তাকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই প্রস্তাব গ্রহণ না করার কারণেই জেবা জান্নাতের পেছনে লেগেছেন দোদুল। জেবা জান্নাত এই বিষয়ে বলেন, বুঝতেছি না আমি কেন নিষিদ্ধ হলাম। স্পষ্টভাবে তারা নিষিদ্ধের কোনো কারণও জানাননি। বিস্ময় প্রকাশ করে এই উঠতি অভিনেত্রী আরও বলেন, আমি নতুন এসেছি বলেই তারা আমাকে নিষিদ্ধ করলো, আর আমি নিষিদ্ধ হয়ে গেলাম!
আসলে ঠিক কী ঘটেছিল জানতে চাইলে জেবা জান্নাত বলেন, ঘটনাটা এক বছর আগের। এতদিনে এই ঘটনাটা তারা সামনে আনলেন। ওই সময় সাজ্জাদ হোসেন দোদুলের কয়েকটা কাজ করেছি। এরপরই ওনার ওয়াইফ লাজুক ভাবির একটা সিরিয়ালে কাজের কথা বলেন, তো আমি কাজটা করতে রাজি হই। কিন্তু কাজটা করতে গিয়ে কিছু সমস্যাও ফেইস করি। যেমন অনেক রাত পর্যন্ত শুটিং করলেও তারা আমাকে কোনো ধরনের ট্রান্সপোর্ট দিত না। ওই সময়ে নিয়ম ছিল রাত ১১টার পর শুটিং করা যাবে না। তারপরও তারা গভীর রাত পর্যন্ত শুটিং করাতেন। ওনারা চাইলে সন্ধ্যারাতেও শুটিং করতে পারতেন। যাই হোক, প্রথম কয়েকদিন কাজ করলেও পরে ট্রান্সপোর্ট অসুবিধার কারণে আমি তাদের বলি, আমি এই কাজটা আর করতে পারবো না। তো আমি দু'তিনদিন শুটিংয়ে যাইনি। এরপর তারা আমাকে বুঝিয়ে আবারও শুটিংয়ে ফেরান, এই বলে, তারা আমাকে দ্রুত ছেড়ে দেবেন। কিন্তু তারা কথা রাখেননি।
কথায় কথায় জেবা আরও বলেন, শেষের দিকে একদিন আমার শুধু একটা দৃশ্য বাকি ছিল কিন্তু তারা ট্রান্সপোর্ট না পাঠানোয় আমি যেতে পারিনি। এই কারণে তারা আমাকে থ্রেট দেন, যে আমার মিডিয়ায় কাজ করা তারা বন্ধ করে দেবেন। এইসব কারণে আমি পরে ওনাদের সঙ্গে কাজ করা বন্ধ করে দিই।
দোদুলের বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাবের অভিযোগ এনে জেবা জান্নাত আরও বলেন, ওই ঘটনার পরে লাজুক ভাবির হাসব্যান্ড আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, আমি যদি ওনার সঙ্গে ফ্রেন্ডশিপ করি বা প্রেম করি তাহলে সবকিছু ঠিক করে দেবেন। তো ওনার হাসব্যান্ড যে বাজে অফার দিয়েছিলেন তা আমি অ্যাকসেপ্ট করিনি। এরপর থেকেই ওনারা ‘হাসব্যান্ড - ওয়াইফ’ মিলে আমার পেছনে লেগেছেন। শুধু আমার সঙ্গে নয়, এমন আচরণ তারা আরও অনেকের সঙ্গেই করেছেন কিন্তু আমি প্রতিবাদ করেছি বলে আমার বিরুদ্ধে তারা এমন অভিযোগ এনেছেন।
কুপ্রস্তাবের কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেছিলেন কিনা জানতে চাইলে জেবা জান্নাত বলেন, না। এখন পর্যন্ত আমি কারও কাছে অভিযোগ দেইনি। কারণ আমি তো ওনাদের সঙ্গে কাজ করেছি, তাই ওনাদের আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু ওনারা সেটা রাখছেন না। আমি তাদের বিরুদ্ধে কোনো বাজে কথা ছড়াতে চাচ্ছি না বলে চুপ আছি এখনো। কিন্তু ওনারা যদি আমার বিরুদ্ধে এমন উল্টা পাল্টা কথা ছড়ায় তাহলে তো আর চুপ থাকতে পারবো না।
নিষিদ্ধের ঘটনায় পাল্টা কোনো অভিযোগ করবেন কিনা এমন প্রশ্নে জেবা জান্নাত বলেন, আমি আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে চাই। এই মুহূর্তে আমি এই নোটিশ নিয়ে শঙ্কিত না। আমি আমার কাজ করে যাচ্ছি, দেখি ঘটনা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তারপর পদক্ষেপ নেবো।
উল্লেখ্য, টিকটকের মাধ্যমে নজর কাড়েন জেবা জান্নাত। এরপর নাম লেখান নাটকে। প্রথমবার তাকে দেখা যায় জয়নাল হাজারীর লাইভ শো অনুষ্ঠানে। পরে টেলিভিশন নাটকে নিয়মিত হন এ অভিনেত্রী। ‘পার্টনারশিপ আনলিমিটেড’, ‘রিকশাওয়ালার প্রেম’সহ বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: