পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষা সমাপনী পিইসি ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা বাতিলের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পেলে এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ঘোষণা দেওয়া হবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।
তিনি বলেন, শুরু থেকে আমরা পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে ছিলাম। কিন্তু অষ্টম শ্রেণির জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা বাতিল হওয়ায় বর্তমানে পঞ্চম শ্রেণির পিইসি ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাবনা হিসেবে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে। তিনি সম্মতি দিলে পরীক্ষা বাতিল করা হবে।
জানা গেছে, পঞ্চম শ্রেণির পিইসি ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা বাতিল করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাবের সার-সংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষা বাতিলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হতে পারে।
করোনার কারণে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দেড় বছর বন্ধ ছিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। শেষ করা সম্ভব হয়নি পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়মিত সিলেবাস। এ কারণে বাতিল হতে পারে পাবলিক পরীক্ষার আদলে হওয়া চলতি বছরের পিইসি ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা। সাময়িক পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট দেওয়ার চিন্তা করছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা যায়, গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সীমিত পরিসরে স্কুল-কলেজে পাঠদান শুরু হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিদিন সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শিখন জ্ঞান অর্জনে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) তত্ত্বাবধানে তিন মাসের একটি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়ন করে তা পড়ানো হচ্ছে। অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে একদিন ও দুদিন করে ক্লাস নেওয়া হলেও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ছয়দিন দুটি বিষয়ের ক্লাস করানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, পঞ্চম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা না নিলেও সিলেবাস শেষ হলে নিজ নিজ ক্লাসে সাময়িক পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। সেই সার্টিফিকেট নিয়ে শিক্ষার্থীরা ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হবে। অষ্টম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা বাতিল হওয়ায় পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষা বাতিলে বিভিন্ন মহল থেকে আমাদের ওপর চাপ আসছে। সব দিক বিবেচনা করে পরীক্ষা বাতিলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা কাউকে অটোপাস দিতে চাই না, ন্যূনতম পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করে শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট দিতে চাই। অন্যথায় অটোপাস দেওয়া হলে সমাজে এক ধরনের নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হয়। শিক্ষার্থীদের নানাভাবে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: