জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একমাত্র খেলার মাঠে (ধূপখোলা মাঠ) খুঁটি দিয়ে সীমানা পিলার বসিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠের চারদিক সাতটি স্থানে ছোট ছোট রড-সিমেন্ট দিয়ে পিলার বসানো হয়েছে।
মাঠে কর্মরত শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চলতি মাসের ৫ তারিখে এসব পিলার বসানো হয়েছে। এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৪৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শামসুজ্জোহাসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
শ্রমিকদের দাবি, মাঠের সংস্কারের জন্যই মূলত এটা করা হয়েছে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এসব পিলার বসিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। মাঠে খেলতে আসে কয়েজনের ছেলের সাথে কথা বলে জানা যায়, সীমানা পিলার বসানোর কারণ হচ্ছে এখানে মার্কেট হবে। এ সময় তারা মাঠটিকে রক্ষার দাবি জানান।
মাঠে খেলতে আসা বিপুল সরকার নামের একজন বলেন, মাঠটিতে আমরা সবসময় খেলাধূলা করি। কিন্ত গত কয়েকদিন থেকে পিলার দেখতে পাচ্ছি। শুনেছি মার্কেট নাকি করা হবে। আমরা চাই এই মাঠে খেলা হউক। মাঠটি খেলার জন্য উপযোগী করা হউক।
সিটি কর্পোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী ও প্রজেক্টের এর দায়িত্বে থাকা হরিদাস বলেন, এখানে মাঠের উন্নয়নের কাজ হবে। তাই আমরা কাজ শুরু করছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা সিটি কর্পোরেশনের মাঠ। আমরা তাই কাজ করছি।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৪৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শামসুজ্জোহা বলেন, আমি এসব ব্যাপারে বিস্তারিত জানিনা। তবে সম্ভবত মাঠ ঠিক করার জন্য খুটি দিয়েছে। যেন মাঠ ঠিক করার সময় যেন কেউ ব্যাঘাত না ঘটাতে পারে তাই এটা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, আমাদের এ ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশন কিছু জানায়নি। আমাদের মাঠে তারা অনুমতি না নিয়ে কিভাবে কাজ করে। মাঠ আমরা প্রতিবার খেলার সময় ঠিক করি, সমাবর্তনের সময় কাজ করেছি। তারা না বলে এসব কিভাবে করবে। আমরা পরিদর্শনক করে কাজ স্থগিত করার জন্য বলেছি।
এবিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে প্রধান নগর পরিকল্পণাবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, এই বিষয়টি আমি জানি না। বিষয়টি নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী ফরিদ আহাম্মদও কিছু বলতে পারেননি। বিষয়টি নিয়ে প্রধান প্রকৌশলী রেজাউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ৭ একর জমির ওপর ধূপখোলা খেলার মাঠটিতে ১৯৮৪ সালে এরশাদের শাসনামলে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। তার এক ভাগ দেয়া হয় তৎকালীন জগন্নাথ কলেজকে। আর একটি অংশ ‘ইস্ট এন্ড খেলার মাঠ’ নামে একটি ক্লাবের কর্তৃত্বে রয়েছে। অপর অংশটি রাখা হয় জনসাধারণ খেলার জন্য। মাঠটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একমাত্র খেলার স্থান। যদিও এটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ২ কি.মি দূরে অবস্থিত এবং মাঠটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৪৫ নাম্বার ওয়ার্ডের আওতাধীন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরনের খেলা এখানে অনুষ্ঠিত হয়। এখানে অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র সমাবর্তনও।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: