অসুস্থ্ মাকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের প্রতিবাদে রংপুরে গণপদযাত্রা করেছে ছাত্র-শিক্ষক, অভিভাবকরা। গণপদযাত্রার পর সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আগামী ৭২ ঘন্টার শিক্ষার্থী মারধরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি সিন্ডিকেট ও দালালমুক্ত করে হাসপাতাল রক্ষার দাবি জানায় বক্তারা। তা নাহলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারি দেয়া হয়।
সোমবার (১৪ জুন) বিকেলে ‘প্রতিবাদী রংপুর’ ব্যানারে করা গণপদযাত্রাটি রংপুর প্রেসক্লাব থেকে মেডিকেল অভিমুখে যাত্রা শুরু করলে টাউন হল এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ বাঁধা দেয়। আন্দোলনকারীরা পুলিশি বাঁধা উপেক্ষা করে নগরীর বঙ্গবন্ধু চত্ত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। পরে বিকাল সাড়ে ৫টায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশটি শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল গুরুতর অসুস্থ। এই হাসপাতালের চিকিৎসা দরকার। বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি হাসপাতাল যেখানে লিফ্টে রুগি উঠলেও পয়সা দিয়ে নামতে হয়। দেশের একমাত্র সরকারি হাসপাতাল যেখানে প্রতিটি পদে পদে বাড়তি টাকা গুণতে হয়। দেশের একমাত্র সরকারি হাসপাতাল যেখানে লাশের ট্রলি ধরলেও স্টাফকে টাকা দিতে হয়। দেশের একমাত্র সরকারি হাসপাতাল যেটা কোনো প্রশাসন চালায় না, চালায় দালালরা।
বক্তারা আরও বলেন, রংপুর বিভাগের ৮ জেলার ২কোটি মানুষের দেখার কী কেউ নেই। পুলিশ, প্রশাসন ও রাজনীতিবিদগণ আর কতদিন চুপ থাকবে? রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল দীর্ঘদিন যাবত গুরুতর অসুস্থ। হাসপাতালের চিকিৎসা জরুরি হয়ে উঠেছে। কে করাবে? দায় কার?
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. তুহিন ওয়াদুদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস্ বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক উমর ফারুক, বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক মাহফুজুল ইসলাম বকুল, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট রাইটস্ ফোরামের সভাপতি মাহমুদ মিলন, সাধারন সম্পাদক বায়েজিদ আহম্মেদ প্রমুখ।
এর আগে গত ১০ জুন রাতে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মায়ের চিকিৎসা করাতে যায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম রিয়াদ ও তার ছোট ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাশেদ করিম। এসময় জরুরি বিভাগে ভর্তি করানোর সময় অতিরিক্ত টাকা না দেয়ায় দুই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালের প্রায় ১৫ জন কর্মচারি হামলা করে মোবাইল, মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: